বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

সামাজিক সুরক্ষা খাতে ৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, সামাজিক সুরক্ষা খাতে ৬ শতাংশ বেড়ে এবারের বাজেটে ১ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে; যা গত বছরের চাইতে ১৩ হাজার কোটি টাকা বেশি হবে। এর বিপরীতে এবার সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়বে ৭ লাখ। গতকাল সিরডাপ মিলনায়তনে বণিক বার্তা ও গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘জন-বাজেট সংসদ-২০২৩’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি। স্বাগত বক্তব্য দেন দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিবিএমের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা, ডিবিএমের সিনিয়র গবেষক মো. শহীদুল্লাহ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, সামাজিক সুরক্ষা খাতে ৬ শতাংশ বেড়ে এবারের বাজেটে ১ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে; যা গত বছরের চাইতে ১৩ হাজার কোটি টাকা বেশি হবে। এর বিপরীতে এবার সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়বে ৭ লাখ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটের মাধ্যমে ৭ লাখ উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়বে। প্রতিবন্ধী, জেলেসহ ১৪৩ প্রকল্পে এ বরাদ্দ ব্যয় করা হচ্ছে। এসব ভাতা ব্যয় করা হয় যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে তাদের জন্য। এবার আমাদের শতভাগ দারিদ্র্যসীমার আওতার মানুষকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৫ সালে এ প্রোগ্রাম চালুর পর থেকে আমাদের দারিদ্র্য ৪২ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। আর অতি দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়া নিয়ে আমরা এখনো স্বস্তির জায়গায় আছি। এভাবে পুশ করতে থাকলে হয়তো আমরা একসময় অস্বস্তির জায়গায় চলে যাব। আমাদের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ জিডিপির ১৪ শতাংশ। আর অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ ২১ শতাংশ। সে হিসেবে সর্বমোট ঋণের পরিমাণ ৩৫ শতাংশ। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১৭ শতাংশ, জাপানে ২০০ শতাংশের বেশি। আমরা এর সঠিক ব্যয় করতে পারি না, তারা সঠিক ব্যয় করে, বিনিয়োগ করে। আমরা এর ঠিকমতো ব্যবস্থাপনা করতে পারলে তা কোনো সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না।

মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে মধ্যবিত্তসহ নানা শ্রেণির মানুষকে সহযোগিতা করছে। কারও কারও ক্ষেত্রে এ পরিমাণ হয়তোবা কম তবে নিয়মিত অর্থ বাড়ছে। দেশ ধীরে ধীরে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ায় সামাজিক সুরক্ষা খাতে ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ছে না।

দেওয়ান হানিফ মাহমুদ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বাজেটে সামাজিক সুরক্ষায় সবচেয়ে বেশি প্রায় ১৭ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, যা জিডিপির আড়াই শতাংশ। যদিও বরাদ্দকৃত এ অর্থ নিয়ে ইতোমধ্যে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। সামাজিক সুরক্ষায় পেনশন ও অন্য অনেক অর্থ যুক্ত করে এ হিসাব আসছে। যেগুলো নিয়ে আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) ইতোমধ্যে আপত্তি তুলেছে।

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে সামাজিক দুর্গতিও বেড়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সুপেয় পানি পাওয়া যাচ্ছে না এবং লবণাক্ততা বাড়ছে। ফলে ওইসব অঞ্চল থেকে মানুষ শহরে চলে আসছে। দুর্গত অঞ্চলের মানুষের জন্যও সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম হাতে নিতে হবে।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, ইউএনডিপির অ্যাসিস্ট্যান্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ আনোয়ারুল হক, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রোগ্রাম ম্যানেজার মার্গারিটা ক্যাপালবি।

দ্বিতীয় অধিবেশন : দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রাণের নির্বাহী পরিচালক নুরুল আলম মাসুদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সাবের হোসেন চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের আহ্বায়ক নাহিম রাজ্জাক, সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, অ্যাকশান এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, ব্রাইট গ্রিন এনার্জি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান দীপাল বড়ুয়া, সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান।

অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিবিএম নির্বাহী কমিটির সদস্য জাকিয়া শিশির, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের এফজিজির ব্যবস্থাপক আজাদ আবুল কালাম, ক্লিনের প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদি ও দি আর্থ ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. মোসলেহউদ্দিন সূচক।

সর্বশেষ খবর