বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

পরকীয়ার জেরে বন্ধুকে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইমন কাজী ও আল-আমিন দুজনই অটোরিকশা চালাতেন। এই সুবাদে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আল-আমিনের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন ইমন। একপর্যায়ে আল-আমিনের স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আল-আমিনকে না জানিয়ে অটোরিকশাতে করে তার স্ত্রীকে নিয়ে কয়েকবার ঘুরতেও যান ইমন। আর এতেই প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ইমনকে হত্যার ছক কষেন আল-আমিন। স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে বাসায় দাওয়াত দেন ইমনকে। পরে কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেন বন্ধুকে। কদমতলীর পশ্চিম মোহাম্মদবাগ এলাকা থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত আল-আমিনকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ডিবি।

অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবিতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শনিবার কদমতলীর পশ্চিম মোহাম্মদবাগ সোনা মারিয়া জামে মসজিদের দক্ষিণ পাশ থেকে ইমনের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি শনাক্তের পর নিহতের বাবা মো. লিটন কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবির ওয়ারী বিভাগ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার বরিশালের হিজলা থানার গোবিন্দপুর খন্না এলাকায় আল-আমিনের শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল-আমিন জানিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে ইমনের পরকীয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে সে। মনে মনে ইমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে গত বুধবার ইমনকে কৌশলে বাসায় ডেকে কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। এরপর ইমন সুদের টাকা ফেরত না দেওয়ার বিষয়ে বাগ্বিত া ও ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে ইমন দেয়ালের সঙ্গে আঘাত খেয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

ডিবি কর্মকর্তা হারুন আরও বলেন, আল-আমিন ভেবেছিল, ইমনের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এক থানা এলাকায় এবং লাশ আরেক থানা এলাকায় ফেললে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারবে না। এ জন্য হত্যার পরে নিহত ইমনের অটোরিকশাটি গেন্ডারিয়া থানার গঙ্গা শাহ মাজারের সামনে ফেলে আসে। আর বস্তায় লাশ ভরে নিজের অটোরিকশায় করে নিয়ে পশ্চিম মোহাম্মদবাগ সোনা মসজিদের পাশের একটি খালি প্লটের ঝোপে ফেলে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে।

ডিবির ওয়ারী বিভাগের ডেমরা জোনাল টিম এডিসি মো. আজহারুল ইসলাম মুকুল বলেন, গতকাল আল-আমিনকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর