চার মাস আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন জাররাফ আহমেদ প্রিতম (৩১)। বিয়ের পর তার স্ত্রী উচ্চতর পড়াশোনার জন্য অস্ট্রেলিয়া যান। কয়েকদিন পর জাররাফেরও যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার আর অস্ট্রেলিয়া যাওয়া হলো না। সম্প্রতি গ্রামে গিয়েছিলেন প্রিতম। গ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয় জাররাফ আহমেদ প্রিতমের। গতকাল শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে তার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড় থেকে মিরপুর-১ নম্বর যাওয়ার পথে তিনি ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। সেখানে তার জিনিসপত্র ছিনতাইকারীরা নিতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এ সময় জাররাফ আহমেদ প্রিতমকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান ছিনতাইকারীরা।
প্রিতমের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর নজিপুর গ্রামে। তার বাবা বদরুজ্জামান। জাররাফ আহমেদ প্রিতম মিরপুরে চাকরি করতেন এবং সেখানেই একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গতকাল বিকালে প্রিতমের শ্যালক মীর পিয়াস জানান, মঙ্গলবার রাতে গ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। ভোরবেলা গাবতলীতে বাস থেকে নেমে তিনি মিরপুরে যাচ্ছিলেন।
পথে মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ল্যাপটপ ও প্রয়োজনীয় জিনিস ছিনতাইকারীরা ছিনিয়ে নেয়। তিনি বাধা দিলে তাকে তারা ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান যান।
তিনি জানান, কয়েকদিন পরই অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল প্রীতমের। কিন্তু ঢাকায় ফিরে তিনি লাশ হয়ে গেলেন। এ খবর তার বাবাকে জানানো হয়নি। কারণ তার বাবার কয়েকদিন আগে ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। প্রিতমের স্ত্রীকেও তারা খবরটি দিতে পারেননি।
প্রিতমের শ্যালক আরও বলেন, আমরা তাকে মঙ্গলবার দিনভর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করি। পরে সন্ধ্যায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে খোঁজ নেই। এর পর জানতে পারি প্রীতমের লাশ সেখানে আছে।
এ বিষয়ে দারুস সালাম থানার এসআই রেজাউল করিম বলেন, প্রীতম খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা শনাক্ত করা যায়নি। যে এলাকায় প্রিতম ছিনতাইয়ের কবলে পড়েছিলেন সেখানে আশপাশে কোনো সিসি ক্যামেরায় ঘটনা দেখা যায়নি। এর পরও আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।