ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচনব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে ফ্যাসিস্ট, দুর্নীতিবাজ ও গণহত্যায় জড়িতদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগের আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিশন এবং প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা তাদের অবৈধ কাজের কুশীলব ছিলেন, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ অবৈধ নির্বাচন আয়োজনের সাহস না পায়। গতকাল রাজধানীর আবদুল গণি রোডে বিএমএ ভবনে প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. সারজিস আলম, জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের, ১২-দলীয় ঐক্যজোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার কমিটির অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, ছাত্র নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোওয়ারী, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, জাতীয় পার্টির নেতা গোলাম মসীহ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপা নেতা রাশেদ প্রধান, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, ড. নাজমুল হাসান কলিমুল্লাহ, ১২ দলীয় ঐক্যজোটের নেতা সৈয়দ এহসানুল হুদা।
পীর চরমোনাই বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশের শান্তিকামী জনগণ এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
রেজাউল করীম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৮ আগস্ট বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, পাঁচটি খাতে সংস্কারের পর জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করবেন। পরবর্তী সময়ে সরকার দুই দফায় ১০ প্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য ১০টি কমিশন গঠন করে। আমরাও মনে করি, এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। কারণ, বিগত সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এসব প্রতিষ্ঠান কতদিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করবে, তা নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন।
পীর চরমোনাই বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রত্যাশা করে, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সংস্কার কার্যক্রমের ধরন ও প্রক্রিয়া কী হবে এবং কতদিনের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে, তা অতিদ্রুত প্রকাশ করবে এবং জাতীয় নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।