সৌদি আরবের রিয়াদে চলছে ২৪ ঘন্টাব্যাপি অনির্দিষ্টকালের কারফিউ। সব ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নিজ এলাকার বাহিরে যাওয়া নিষেধ। বাহিরে কাউকে পাওয়া গেলে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য সঙ্কটে থাকা প্রবাসীদেরকে রিয়াদের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে এসে ফুড বাস্কেট নিয়ে যেতে বলা হয়।
আজ শুক্রবার সকালে কারফিউ ভঙ্গ করে ঢাকা মেডিকেল সেন্টার নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটির সামনে জড়ো হয় ৬০০-৭০০ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ছিল না সামাজিক দুরত্ব। দূতাবাসের দেওয়া ফুড বাস্কেট নিতে সেখানে হয় দীর্ঘ লাইন।
লাইনে দাঁড়ানো এক বাংলাদেশি বলেন, মাত্রাতিরিক্ত লোকের সমাগম দেখে ত্রাণ বিতরণ সমাপ্ত না করেই নামাজের কথা বলে সটকে পড়েছেন দূতাবাস থেকে আসা কর্মীরা। পরে পুলিশ এসে ছত্রভঙ্গ করে দিলে ফুড বাস্কেট ছাড়াই স্থান ত্যাগ করেন অনেক প্রবাসী।
সহায়তা নিতে আসা প্রবাসীরা বলেন, আমরা চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। এই অবস্থায় দূতাবাস থেকে সহায়তা দেওয়া হবে শুনে আবেদন করি। পরে আমাকে ফোন করে ঢাকা মেডিকেল সেন্টার থেকে ফুড বাস্কেট নিয়ে যেতে বললে আজকে সেটি নিতে আসলেও শেষ পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা ছাড়াই ফিরে যেতে হচ্ছে।
এই প্রবাসী বলেন, আগে শুনেছিলাম বাসায় বাসায় গিয়ে দিয়ে আসবে। কিন্তু এখানে আইন ভঙ্গ করে এতো লোক জড়ো করবে জানলে আসতাম না। তিনি দূতাবাসের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ২৪ ঘন্টা কারফিউ চলাকালীন শত শত লোক একত্রিত করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ত্রাণ বিতরণের সিদ্ধান্ত তারা (দূতাবাস) কিভাবে নেয়।
সচেতন প্রবাসীরা বলছেন, দূতাবাস এভাবে আইন ভাঙ্গতে উৎসাহিত করতে পারেনা। তারা যদি সৌদি সরকার থেকে অনুমতি নিয়ে নিজেরা বিতরণ করতে না পারে তাহলে দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ। তারা বলেন, ঢাকা মেডিকেল কারফিউ চলাকালীন রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারবে তবে এভাবে লোকজন জমা করে সহায়তা বিতরণের জন্য সৌদি সরকার তাদেরকে অনুমতি দেয়নি।
ইতিপুর্বে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্নজন সতর্ক করলেও এতে কর্ণপাত করেনি দূতাবাস কর্মকর্তারা। বিষয়টি দূতাবাস কর্মকর্তাদের নজরে আনলে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, আপনার বক্তব্য বুঝতে পেরেছি। সমাধান কি জানতে চেয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েন তিনি। দূতাবাসের এমন কর্মকাণ্ডে স্যোশাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ