যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া’র বার্কলে ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত ‘দ্য সুবির এ্যান্ড মলিনী চৌধুরী সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ’র কার্যক্রম করোনাতেও ব্যাহত হয়নি। বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য তথা ভাষা, সংস্কৃতি, বাঙালিত্ব, জাতীয় পরিচয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বিশাল জনগোষ্ঠিকে রক্ষা ইত্যাদি নিয়ে গবেষণার অভিপ্রায়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
সকলেই যখন এই মহামারিতে গৃহবন্দি-বিপর্যস্ত ছিলেন, সে সময়ে এই সেন্টার ভার্চুয়াল সভা-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম অব্যাহত রেখেছিল।
সারাবিশ্বের মেধাবি ও উদ্যমী ছাত্র-ছাত্রীদের পছন্দের অন্যতম শীর্ষে থাকা বার্কলে ক্যাম্পাসে ২০১৩ সালে স্থাপিত এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা-অধ্যাপনায় আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ প্রদান করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীরাও যুক্তরাষ্ট্রে আসার সুযোগ পাচ্ছেন।
চট্টগ্রামের সন্তান সুবির চৌধুরীর অর্থে প্রতিষ্ঠিত এই সেন্টারটি যুক্তরাষ্ট্রে একমাত্র একটি শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতিমধ্যেই মার্কিন রাজনীতি ও প্রশাসনেও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। সুবির চৌধুরী বর্তমানে বড় বড় কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এটি তার পেশায় পরিণত হয়েছে। ইতিমধ্যেই কোম্পানীগুলোর ব্যবসায়িক পলিসি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, কর্মচারিদের আরো উদ্যমী করতে কী ধরনের প্রক্রিয়া অবলম্বন করা উচিত সে আলোকে বেশ কটি গ্রন্থ প্রকাশ করেও সুবির চৌধুরী মার্কিন মুল্লুকেই শুধু নয় ইউরোপেও ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন।
মৃদুভাষী সুবির চৌধুরী এককভাবে বহুজাতিক সমাজে বাঙালি সংস্কৃতিকে জাগ্রত রাখতে গত কয়েক বছরে যে ভূমিকা পালন করেছেন এবং এখনও করছেন, তা দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষকে অভিভ’ত করেছে। স্মরণ করা যেতে পারে, ‘কাউন্সিল অব আমেরিকান ওভারসীজ রিসার্চ সেন্টার’র সহায়তায় ‘দ্য চৌধুরী সেন্টার’ রোহিঙ্গা ইস্যুতে অন্তত ৩টি কর্মসূচি হাতে নেয়। এর স্থায়ী সমাধানে মার্কিন নীতি-নির্দ্ধারকদের সাথেও কথা বলেছেন লসএঞ্জেলেস সিটির সন্নিকটে বসবাসরত সুবির চৌধুরী।
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, জলবায়ু পরিবর্তনের যে আশংকা করা হচ্ছে তা মোকাবেলায় বিজ্ঞানভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে বিশেষজ্ঞগণকে নিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্প্রতিবার থেকেই শুরু হচ্ছে লাগাতার কর্মশালা। যে সবে অংশ নেবেন স্ব স্ব বিষয়ে খ্যাতনামা ব্যক্তিরা। রবীন্দ্রসঙ্গীতের ইংরেজী অনুবাদের একটি বিষয়ও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সর্বমহলে। কারণ, ঐসব সঙ্গীতের প্রেক্ষাপট এবং উপস্থাপনায় মূলত: বাঙালিদের জেগে উঠার ধারাবিবরণী রয়েছে।
বাংলাদেশ এবং নেপালে মাইগ্রেশন এবং লেবার মার্কেটে করোনার প্রভাব শীর্ষক কর্মশালায় ( ৩ সেপ্টেম্বর ক্যালিফোর্নিয়া সময় সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা ) কথা বলবেন ইয়েল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ মুশফিক মুবারক।
১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ‘জাতীয় পরিচয়, লিঙ্গ, দেশ ও কমিউনিটি’ বিষয়ে লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্সের অধ্যাপক নায়লা কবীর বিস্তারিত আলোচনা করবেন।
১৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের ইংরেজী অনুবাদ আলোকে গবেষণামূলক বক্তব্য দেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজীর অধ্যাপক ফখরুল আলম।
১০ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে বিশ্লেষণমূলক বক্তব্য রাখবেন বার্কলে ক্যাম্পাসে ইন্সটিটিউট অব সাউথ এশিয়া সেন্টারের কর্মকর্তা সমিক বন্দোপাধ্যায়।
১৭ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। এতে গবেষণামূলক বক্তব্য উপস্থাপন করবেন স্কলার জ্যাসন কোন্স, নাভিদা খান এবং কাসিয়া পাপরকি।
১৯ নভেম্বরর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মালবিকা সরকার বক্তব্য দেবেন উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে জ্ঞাণের সীমাবদ্ধতা বিষয়ে।
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সমসাময়িক ইস্যুতে খোলামেলা কথা বলবেন নাঈম মোহাইমেন এবং ইয়াসুফুমি নাকামারি। এসব কর্মশালা ও সেমিনারে সারাবিশ্বের লোকজনই অংশ নিতে পারবেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল