পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসব ও আনন্দের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূতালয় প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালার মাধ্যমে এ বিশেষ দিবস উদযাপন করা হয়।
হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও ইসলামাবাদে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে দূতালয় প্রাঙ্গণ বর্ণাঢ্য ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে সুসজ্জিত করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে সকালে দূতালয় প্রাঙ্গণে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন হাইকমিশনার মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী।
এসময় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর হাইকমিশনার সকলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ৩০ লাখ শহীদ বাঙালির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তাটি দেখানো হয়। আলোচনা পর্বে বিভিন্ন বক্তারা স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য, গুরুত্ব ও বাঙালি জাতির স্বাধীকার আন্দোলনে জাতির পিতার অবদান তুলে ধরেন।
হাইকমিশনার তার বক্তব্যে স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি গত এক যুগে বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ সবগুলো সূচকে সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করে পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, কর্ণফুলী টানেল ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সবই এখন দৃশমান।
তিনি আরও বলেন, পৃথক যমুনা রেলসেতুর জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস অতিমারির বিস্তাররোধের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখার মাধ্যমে করোনা অতিমারির মধ্যেও বাংলাদেশ ৫ শতাংশের অধিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এ সকল অর্জন সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে।
আলোচনা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সবশেষে হাইকমিশনার সকলকে নিয়ে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবসের কেক কাটেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই