গ্রিসে পালিত হয়েছে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্মদ কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটি পালনের সূচনা হয়।
এ সময় গ্রিসে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত হয়ে শহীদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দিবসটি পালনের জন্য দূতাবাস বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করেছে। যার মধ্যে ২১শে ফেব্রুয়ারি সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও ভাষা আন্দোলনের শহীদগণ, জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা ও সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং বাংলাদেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং ২১শে ফেব্রুয়ারির মূল প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল উল্লেখযোগ্য।
অমর একুশে মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গনে মহান একুশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে বিশেষ আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা মহান একুশের শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একযোগে দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তারা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল চেতনা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্মদ তাঁর বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সাথে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের অমূল্য ভূমিকা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
আলোচনাপর্বে অংশ নেন বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের নেতৃবৃন্দসহ গ্রীস প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আঞ্চলিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এ বছর বাংলাদেশ দূতাবাস, এথেন্স প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু-কিশোর ও প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য মুজিববর্ষে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১ উপলক্ষে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। রাষ্ট্রদূত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দূতাবাসের আয়োজিত অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়া শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক পর্বে কবিতায় ও গানে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। কোভিড-১৯ মহামারিজনিত লকডাউন তুলে নেয়ায় ও সকল বিধি নিষেধ শিথিল করায় দুই বছর পর একুশের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ এবং সন্তুষ্টি লক্ষ্য করা যায়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন