আরও ম্যালা বছর আগেই সুনীল বলে রেখেছেন, কেউ কথা রাখে না। তবে এতদিন কথাটা কেবল মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতো। আর এখন প্রযোজ্য শীতের ক্ষেত্রেও। কারণ, শীতও কথা রাখছে না। কীভাবে কথা রাখছে না, সেটা সবাই অবগত। তবু আমাদের দায়িত্ব বলা, তাই বলছি। আগেকার দিনে কী হতো? শীত চলে আসত অক্টোবরের মাঝামাঝি বা শেষদিকে। কিন্তু এখন অক্টোবর গিয়ে, নভেম্বর গিয়ে ডিসেম্বর চলে যাচ্ছে, তবু শীতের দেখা নেই। আর এ নিয়ে ঘরে ঘরে নানা অঘটন। দু-একটা অঘটনের খবর না দিলেই নয়। আমার এক বড় ভাই বললেন, কেন যে ছোটবেলায় দড়িটান খেলা প্র্যাকটিস করলাম না! যদি প্র্যাকটিসটা থাকত, তাহলে আজ খাটের সঙ্গে বাড়ি খেয়ে নাক ভাঙত না। আফসোস! বাসায় আমি বললাম শীত যে কোনো সময় পড়ে যেতে পারে। অতএব কম্বল নামানো দরকার। তোর ভাবি বলল, এত তাড়াতাড়ি শীত পড়বে না। দেরি
আছে। আমি তার কথা মানলাম না। আলমারি থেকে কম্বল নামাতে চাইলাম। কিন্তু তোর ভাবি নামাতে দেবে না। শেষ পর্যন্ত ধাক্কাধাক্কি, ঠেলাঠেলি, একপর্যায়ে কম্বলের দুই মাথা ধরে দুদিকে টানাটানি। হঠাৎ তোর ভাবি এমন হেঁচকা টান মারল, আমি ধড়াম করে পড়ে গেলাম। আর আমার মাথা গিয়ে বাড়ি খেল খাটের কোনায়। এবার তুই-ই বলল, ছোটবেলায় যদি দড়িটান খেলার প্র্যাকটিসটা করতাম, তাহলে কি আজ কম্বল টানাটানিতে এ লজ্জাজনক পরাজয় মেনে নিতে হতো? আমি মাথা ডানে-বামে নাড়াব না ওপর-নিচে নাড়াব বুঝতে না পেরে স্থান ত্যাগ করলাম। তারপর কিছু দূর যেতেই আমার এক প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা। প্রতিবেশীর হাতে ব্যাগ। জিজ্ঞেস করলাম, বাজার করে ফিরলেন নাকি? প্রতিবেশী বললেন, বাজার করেছি। তবে তরিতরকারি বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনিনি। কিনেছি শীতের কাপড়। সস্তায় পেয়েছি তো, তাই কাজের মেয়েটার জন্য নিয়ে এলাম। আমি বললাম, এ প্রবণতাটা দূর হওয়া উচিত। নিজেরা পরব দামি দামি কাপড় আর কাজের লোকদের জন্য আনব অতি সস্তা কাপড়, এটা ঠিক না। প্রতিবেশী বললেন, আপনি এক লাইন বেশি বুঝে ফেললেন। আমি কাজের মেয়ের পরার কাপড় আনিনি। আসলে এখনো শীত না পড়ার কারণে বাজারে এত সস্তায় শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছিল, ভাবলাম কাজের মেয়েটার জন্য গোটা চারেক কাপড় নিয়ে যাই। যাতে ঘর মুছতে পারে। আমি চোখ কপালে তুলে বললাম, তার মানে আপনি বোঝাতে চাচ্ছেন, ত্যানা বা নেকরার চেয়েও কম দামে শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে? প্রতিবেশী বললেন, কী দামে বিক্রি হচ্ছে, সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে, এখনো বিক্রি হচ্ছে। তবে আর দু-চার সপ্তাহের মধ্যে যদি ঠিকঠাক শীত না পড়ে, তাহলে আর বিক্রিও হবে না। আমার এক ছোটভাই বলল, যা বুঝলাম, চিরকুমার সভাতেই জয়েন করতে হবে। কারণ, বিয়ে সহজে হচ্ছে না। প্রকৃতি যদি বিট্রে করে, তাহলে কিছু করার আছে? আমি বললাম, কী হয়েছে একটু জানতে পারি? ছোটভাই বলল, কিছু দিন আগে আমার বাবা-মা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আগামী শীতে আমাকে বিয়ে দেবে। কিন্তু এখন শীতও পড়ছে না, বিয়েও হচ্ছে না। ‘কী একটা অবস্থা’! আমার এক বন্ধু বলল, আমাদের কপালটা একটু বেশিই খারাপ। আগের জামানায় প্রচুর শীত পড়ত। দ্রব্যমূল্যের বাজারে আগুন লাগলে মানুষ গিয়ে আগুন পোহাতে পারত। কিন্তু আমরা এতটাই হতভাগা যে, যতটুকু শীত পড়লে আগুন পোহানো যায়, ততটুকু শীত পড়লোই না। ফলে বাজারের আগুন অপকার ছাড়া উপকারে এলো না। ‘কী একটা অবস্থা-২’!
শিরোনাম
- কঙ্গোয় তামা–কোবাল্ট খনিতে সেতু ধসে নিহত ৩২ শ্রমিক
- ভারতকে লজ্জায় ফেলে পাকিস্তানের সহজ জয়
- লেবাননে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা : নিহত ১
- ভেনেজুয়েলায় সামরিক হামলা নিয়ে মনস্থির করে ফেলেছি: ট্রাম্প
- ইউক্রেনের আরও দুটি গ্রাম দখলের দাবি রাশিয়ার
- জলবায়ু অর্থায়নের নামে ভয়াবহ ঋণের ফাঁদ
- চায়ের আড্ডায় টুকুর গণসংযোগ
- মোংলায় লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষের প্রচারণা
- সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযান, গ্রেফতার ১৭০০
- বরিশালের তিন অসহায় নারীর স্বামীকে রিকশা বিতরণ
- নারী কাবাডি বিশ্বকাপের ট্রফি উন্মোচন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
- র্যাবের অভিযান টের পেয়ে সন্ত্রাসীর ছোড়া গুলি লাগলো গৃহবধূর বুকে
- রোহিঙ্গা ভোটার চিহ্নিত করতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ ইসির
- প্রেষণে জনবল নিয়োগে বাংলাদেশ ও কাতার সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর
- ভবিষ্যতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকবে না : আমিনুল
- গণতন্ত্র উত্তরণের পথ হলো সফল জাতীয় নির্বাচন : মান্না
- ‘হিংসার রাজনীতি করে শেখ হাসিনা বগুড়ার উন্নয়ন করেনি’
- তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান সেলিমের
- একটি দল ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করছে: তৃপ্তি
- নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করতে হবে : মোশাররফ
শীত আছে নাকি নেই
ইকবাল খন্দকার
প্রিন্ট ভার্সন