দুরারোগ্য ব্যাধি গুলিয়ান বারি সিন্ড্রোম (জিবিএস)। রোগটি মরণব্যাধি, চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। বিশ্বে জিবিএস আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় দুটি আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। একটি থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জ এবং অন্যটি ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন থেরাপি। ওষুধ ও থেরাপি চিকিৎসাটি ব্যয়বহুল। কিন্তু থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জ পদ্ধতিতে তুলনামূলক খরচ কম। এটি ঢাকার সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি হাসপাতালে থাকলেও চট্টগ্রামে নেই।
কিন্তু এবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে জিবিএস রোগীর চিকিৎসায় শুরু হলো থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জ পদ্ধতি। সম্প্রতি দুজন রোগীর শরীরে এ চিকিৎসা প্রয়োগ করা হয়। এর মাধ্যমে দুরারোগ্য ব্যাধি জিবিএস চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে থেরাপিউটিক প্লাজমা পরিবর্তনের যুগে প্রবেশ করল চমেক হাসপাতাল।
প্রথমবারে মতো থেরাপিউটিক প্লাজমা পরিবর্তনের সময় উপস্থিত ছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান, নিউরোমেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান, এনেসথেসিয়া এবং আইসিইউ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশীদ, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. তানজিলা তাবিব চৌধুরী, নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. পঞ্চানন দাস, সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, সহকারী অধ্যাপক ডা. জামান আহমেদ, রেজিস্ট্রার ডা. পিযুষ মজুমদার, এনেসথেসিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দা নাফিসা খাতুন প্রমুখ।এনেসথেসিয়া বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশীদ বলেন, ঢাকায় সরকারি বেসরকারি কয়েকটি হাসপাতালে থেরাপিউটিক প্লাজমা প্রয়োগের ব্যবস্থা থাকলেও চট্টগ্রামে নেই। প্রথমবারের মতো সম্প্রতি দুজন জিবিএস রোগীর শরীরে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। একজন রোগীকে পাঁচ দিন এ চিকিৎসা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে দুরারোগ্য ব্যাধি জিবিএস রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো।
চমেক হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দেদার বলেন, হাসপাতালে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ জন জিবিএস রোগী ভর্তি হয়। সংকটাপন্ন হলে তাদের আইসিইউতে রাখা হয়। অন্যথায় দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসায় ভালো হয়। তবে থেরাপিউটিক প্লাজমা পদ্ধতিটি অনেক আধুনিক ও কার্যকর। চমেক হাসপাতালে এটি প্রথমবারের মতো প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
জানা যায়, বেসরকারিভাবে থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জে প্রায় ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা খরচ হয় (৫টি থেরাপি)। তবে একই চিকিৎসায় সরকারি ফি ২৫ হাজার টাকাসহ আনুষঙ্গিক সব মিলিয়ে ২ লাখ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। তবে আধুনিক এ পদ্ধতি প্রয়োগে বর্তমানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও সংকট আছে অপরিহার্য কিটের। হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা গেলে রোগীর খরচ ১ থেকে দেড় লাখ টাকা হবে। অন্যদিকে থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা নিলে প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়। জিবিএস হলো ইমিউন প্রতিক্রিয়াজনিত রোগ। ক্যামপাইলো ব্যাকটার জিকুনি নামক একটি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে জিবিএস দেখা দেয়।