প্রায় ১৭ বছর আগের কথা। সমাজের জন্য কিছু একটা করার চিন্তা পেয়ে বসে আলী আকবরের। বন্ধু হিরা লালের পরামর্শে শুরু করেন গাছ লাগানো। নানা দিক চিন্তায় লাগানো শুরু করেন তালগাছ। বেছে নেন রেলওয়ের দুই ধার। আলী আকবরের সেই তালগাছ উঁকি দিয়েছে আকাশে। তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা এসব গাছ বেশ দৃষ্টিনন্দন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের রামধননগর গ্রামের বাসিন্দা মো. আলী আকবর খান। ওই গ্রামের মৃত সুলতান খানের ছেলে। বয়স ৮০ বছর। এই বয়সেও গাছ লাগানোর নেশা এতটুকু কমেনি তাঁর। গাছের যত্নও করে যাচ্ছেন নিয়মিত। স্ত্রী আর দুই ছেলের মতো গাছ নিয়েও যেন তার সংসার। তিনি গাছ লাগিয়েছেন আখাউড়ার আজমপুর গ্রামের বাইপাস রেললাইন এলাকা থেকে তিতাস সেতু সংলগ্ন এলাকার আগ পর্যন্ত। আকবর আলী খান জানান, সিদ্ধান্ত নিয়েই শুরু করেন কাজ। তবে কাজটা খুব একটা সহজ ছিল না। প্রথমে তিনি তাল বীজ সংগ্রহ শুরু করেন। নিজ এলাকার বাইরেও ছুটে যান জেলা সদর ও আশুগঞ্জ উপজেলায়। ওই এলাকার মিষ্টির দোকানগুলোতে ছুটে গেছেন যেখানে তালের বিভিন্ন আইটেম বানানো হয়। সেখান থেকে বীজ সংগ্রহের পর মাটিতে পুঁতে দিতেন তিনি। তিনি বলেন, ‘বীজ থেকে চারা গজানোর পর পরিশ্রম বেড়ে যায়। প্রতিনিয়ত এসব চারার প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। এসব চারার যত্ন করতে হয়। আমার লাগানো ওইসব গাছের ছায়াতলে বসে যখন মানুষ প্রশান্তি পায়, সারিবদ্ধ গাছ দেখে যখন মানুষ প্রশংসা করে তখন মন জুড়িয়ে যায়। গাছ লাগানোর পর নিজের সন্তান জন্ম দেওয়া ও লালন পালনের মতো মনে করে যত্ন করেছি। গাছের প্রতি ভালোবাসা এমন ছিল যে কখনো টাকার কথা ভাবিনি। একদিন পৃথিবীতে আমি থাকব না, তবে আমার লাগানো গাছগুলো রয়ে যাবে। আর এটাই হবে আমার অস্তিত্ব।’