পোশাকে আভিজাত্য ও রুচিশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় জামদানি শাড়ি। সময়ের বিবর্তন ও নানা সংকটে সেই জামদানি শাড়ি এখন খুব বেশি তৈরি হয় না। এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে কাজ করছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার যুবক মোস্তাফিজুর। তার বাড়ি টগরবন্দ ইউনিয়নের পানাইল গ্রামে। এখানে তাঁত বসিয়ে তৈরি করছেন জামদানি শাড়ি। তার তৈরি জামদানি শাড়ির কদর রয়েছে সর্বত্র। ক্রেতারা তার বাড়িতে এসে এ শাড়িগুলো কিনে নিয়ে যান। কখনো তার কাছে আগাম অর্ডারও দেওয়া হয়। মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ২০২১ সালে বাড়িতে একটি তাঁত বসিয়ে নিজেই শাড়ি তৈরির কাজ করতেন। তার স্ত্রী তাকে সহায়তা করেন। জামদানি শাড়ির চাহিদা থাকায় নিজ উগ্যোগে এখন তার তাঁতের সংখ্যা ছয়টি। কারিগর রয়েছের ১২ জন। মাসে প্রায় ২২ থেকে ২৫টি শাড়ি তৈরি করতে পারেন। আলফাডাঙ্গার প্রত্যন্ত গ্রামে বসে বাংলাদেশের প্রথম জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া ‘জামদানি শাড়ি’ তৈরিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর। তাঁতে বোনা শাড়ির বুনন, ডিজাইন, ভালো মানের সুতা ব্যবহারসহ সঠিক উপকরণ ব্যবহার করায় তার তৈরি শাড়ি ‘জামদানি মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। জানা যায়, দরিদ্রতার কারণে খুব বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেননি মোস্তাফিজুর। জীবিকার সন্ধানে শৈশবেই ছুটে যান ঢাকায়। ২০০৭ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের জামদানিপল্লিতে কাজ শেখেন। সেই তাঁত পল্লিতে কাটিয়ে দেন ১৪ বছর। ২০২১ সালে ফিরে আসেন নিজ গ্রাম পানাইলে। এখানেই একটি তাঁত দিয়ে যাত্রা শুরু তার। মোস্তাফিজুর বলেন, ‘৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। একটি শাড়ি বুনতে কয়েক হাজার রেশমি সুতা লাগে। এসব আমি রাজশাহী থেকে কিনে আনি। নানা উপকরণ কিনতেও ব্যয় হয় অনেক টাকা। একটি শাড়ি বুননে যা ব্যয় হয়, তা বিক্রি করে কোনো রকমে টিকে আছি। প্রতি মাসে সবকিছু বাদ দিয়ে ৫০/৬০ হাজার টাকা লাভ থাকে।’ মোস্তাফিজুরের কারখানায় কাজ করা কারিগররা জানান, জামদানি শাড়ি তৈরিতে একসঙ্গে দুজন কারিগর লাগে। কারিগররা প্রতিটি সুতা হাত দিয়ে ঘুরিয়ে এ শাড়ি বুনন করেন। দুজন কারিগর প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা শ্রম দিলে নকশাভেদে একটি শাড়ি তৈরি করতে তিন থেকে ১০ দিন এমনকি শাড়ির প্রকারভেদে চার মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সুতার মান ও কারুকাজ বিবেচনায় একটি শাড়ির দাম ৩ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বা তারও বেশি হতে পারে। মোস্তাফিজুরের কারখানায় হাফ সিল্ক জামদানিই বেশি বুনন হয়। এ শাড়ির বৈশিষ্ট্য হলো, আড়াআড়ি সুতাগুলো রেশমের ও লম্বালম্বি সুতাগুলো তুলার। এ ছাড়া রেশম সুতার ‘ফুল সিল্ক জামদানি’ এবং তুলার সুতার ‘ফুল কটন জামদানি’ তৈরি হয়। শাড়িগুলো বুননের পর ঢাকায় বিসিক বিক্রয় কেন্দ্র, তাঁত পল্লি ছাড়াও বিভিন্ন জামদানি মার্কেটে বিক্রি হয়। মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী লিপি সুলতানা বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমার স্বামীর কাছ থেকে এই কাজ শিখেছি। এখন আমিও কাজ করি।’ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জামদানি শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে উদ্যোক্তাদের সরকারি সহায়তা দরকার। সরকারি সহায়তা পেলে আমি আরও কয়েকটি তাঁত বসাতে পারব। সেটি হলে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোস্তাফিজুরকে সব রকমের সহায়তা দেওয়া হবে।
শিরোনাম
- আমরা কোন রাজনীতির কথা ভাবছি
- রাজধানীতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন, পুড়ল দোকান
- ঢাকায় ভূমিকম্পে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের সমবেদনা
- ভূমিকম্পে ঢাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের তালিকা প্রকাশ
- নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভূমিকম্পে শিশুর মৃত্যু, আহত ২৪
- যাত্রাবাড়ীতে নবীউল্লাহ নবীর গণসংযোগ
- রাজধানীতে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি
- ‘তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হাসিনার বিচার হয়েছে, তবে আপিলের সুযোগ আছে’
- পোস্টাল ভোটিং: দুই দিনে সাড়ে ৬ হাজার নিবন্ধন
- একসঙ্গে সহকারী অধ্যাপক হলেন ১৮৭০ শিক্ষক
- হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সতর্কবার্তা
- ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী জেলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে
- রাজশাহীতে বদ্ধ ঘর থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- ‘ঢাকার পুরনো ভবনগুলোর ৯০ শতাংশ বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মিত’
- ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০
- ধানের শীষে দেশের মানুষের আস্থা রয়েছে: দুলু
- ডেঙ্গুতে মৃত্যুহীন দিনে হাসপাতালে আরও ৪৩৬ জন
- যেভাবে স্মার্টফোনেই মিলবে ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা
- এমন ভূমিকম্প আগে কখনও অনুভব করিনি : ফারুকী
- ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের নির্দেশনা
পানাইল গ্রামের মোস্তাফিজুরের জামদানি সাধনা-সংগ্রাম
কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর