কুড়িগ্রামের সন্তান রেদোয়ান সরকার হৃদয়। পড়াশোনা করেছেন কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে। তার বাবা পেশায় অ্যাডভোকেট এবং মা স্কুলশিক্ষিকা। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে ছোট। ২০২১ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে এক বছর প্রশিক্ষণ শেষে ৫৪ তম ক্যাডেট চতুর্থ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন। জাহাজে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ শুরুর পর ২০২৩ সালে ফেসবুক পেজ খোলেন। নাম দেন- ‘হৃদয় দ্য সেইলর’। জাহাজে করে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছুটে বেড়ান। প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক এবং ভারত মহাসাগরও পাড়ি দিতে হয় অনেক সময়। কাজের ফাঁকে অবসরে ফেসবুকে সমুদ্রজীবনের রোমাঞ্চকর গল্প শোনান তিনি। ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। ফেসবুক, ইউটিউব এবং অনান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তার অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। হৃদয় তার ভিডিওতে জাহাজে কী থাকে, কতগুলো কনটেইনার একত্রে বহন করা যায় এবং আটলান্টিকসহ বিভিন্ন মহাসমুদ্রের গল্প বলেন। সমুদ্র জীবনের ঘটনাবলি নিয়ে তিনি বইও লিখেছেন। ২০২৪ বইমেলায় তিনি প্রকাশ করেন তার প্রথম বই ‘আটলান্টিকের ১৮০ দিন’। প্রতিবার জাহাজে যোগদানের আগে তাকে চুক্তিতে সই করতে হয়। বছরের ছয় মাস জাহাজে চুক্তিভিত্তিক কর্মরত থাকেন আর ছয় মাস থাকেন ছুটিতে। হৃদয় তার ক্যামেরায় সমুদ্রজীবনের অজানা কথা এবং আটলান্টিক এবং প্রশান্ত মহাসাগরের সৌন্দর্য তুলে ধরেন। জাহাজে থাকার কারণে এ পর্যন্ত ২০টিরও বেশি দেশে গিয়েছেন তিনি। তিনি জানান, এসব ভিডিও কনটেন্টের মাধ্যমে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করেন। হৃদয় সরকার বলেন, ‘সমুদ্রে চাকরি আমাকে জীবিকার সুযোগ দিয়েছে, তাই এ কাজ নিয়ে ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই। দেশে কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। বেকারের সংখ্যাও বাড়ছে। ভবিষ্যতে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে।’ সমুদ্রে কাটানো জীবনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন, ‘সমুদ্র এত সুন্দর! এখানে কেউ একবার আসলে অবশ্যই বারবার ফিরে আসবেন। এ জীবন রোমাঞ্চকর। সব মিলিয়ে সমুদ্রজীবন আমার কাছে রূপকথার মতোই সুন্দর।
-গৌরীপুর, ময়মনসিংহ