শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

লালমাই পাহাড়ে বাড়ছে বৈচিত্র্যময় ফসলের চাষ

চা আনারস কফি কাজুবাদামে হাসছে এলাকা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

লালমাই পাহাড়ে বাড়ছে বৈচিত্র্যময় ফসলের চাষ

কুমিল্লার লালমাই পাহাড়। লাল মাটির এই পাহাড়ে বাড়ছে বৈচিত্র্যময় ফসলের চাষ। পাহাড়ের চড়ার (কচুমুখি) সুনাম দেশজুড়ে। এখানে বিচ্ছিন্নভাবে কাঁঠাল, কলা, সবজি, আদা ও হলুদ চাষ হতো। সম্প্রতি সেখানে নতুন করে চা, কফি, কাজুবাদাম, মাল্টা, আম, আনারস বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে। কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, লালমাই পাহাড়ের অবস্থান কুমিল্লা আদর্শ সদর ও সদর দক্ষিণ উপজেলায়। পাহাড়ের ৭০ ভাগ পড়েছে সদর দক্ষিণ উপজেলায়। পাহাড়ে ভূমির পরিমাণ প্রায় ১৮৩৫ হেক্টর। তার মধ্যে ৩০ ভাগ বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যবহৃত হয়েছে। চাষযোগ্য ভূমি ১২৯০ হেক্টর। তার মধ্যে ১০ ভাগ ভূমি অনাবাদি রয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, লালমাই পাহাড়ের বড় ধর্মপুর এলাকায় জৈব সার দিয়ে বিষমুক্তভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে চা। এই বাগানের চা-পাতা রপ্তানির পরিকল্পনার কথা জানালেন উদ্যোক্তা তারিকুল ইসলাম মজুমদার। রপ্তানি হতে পারে ইংল্যান্ড ও জাপান। চন্ডিমুড়া এলাকা সংলগ্ন বড় ধর্মপুর এলাকায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে আনারসের চাষ হয়েছে। হানিকুইন জাতের আনারসে হাসছে পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয় কৃষকদের গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন এই এখানে দুই হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ করেছে। পাহাড়ের পতিত জমিতে রূপবানমুড়া এলাকায় কলা, লেবু, মাল্টা, আনারস, আম, কাসাবা, পেঁপে ও মদিনানগর এলাকায় কচুমুখি চাষ করেছেন কৃষক আবুল কালাম আজাদ। এতে তার গত বছর লাভ হয়েছে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। পাহাড়ের টিলায় টিলায় বাড়ছে মিষ্টি আমের চাষ। বারপাড়া এলাকায় ২ একর জমিতে আমের চাষ করেন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা এ আর এম হারিছুর রহমান।

কুমিল্লা অঞ্চলে প্রথমবারের মতো চা-বাগান করা তারিকুল ইসলাম মজুমদার বলেন, তার পরিকল্পনা রয়েছে বিষমুক্ত উপায়ে তৈরি চা-পাতা তিনি রপ্তানি করবেন। ইংল্যান্ড ও জাপানের কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার ভালো যোগাযোগ আছে। উৎপাদনের পরিমাণ ও মান বাড়িয়ে ২০২৫ সালে তিনি চা রপ্তানি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি অফিসার জোনায়েদ কবির খান বলেন, পাহাড়ের সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর, বারপাড়া ইউনিয়ন ও নগরীর ব্লক মিলে আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় ১১০০ হেক্টর। এ উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় বিভিন্ন রকম ফসলের চাষ হচ্ছে। আমরা উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, এখানে হলুদ, আদা, কচুমুখি যুগ যুগ ধরে চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগ সম্প্রতি সংযুক্ত করেছে কফি ও কাজুবাদাম। এখানে ভালো সবজিও উৎপন্ন হয়। এখানে বাণিজ্যিকভাবে চা ও আনারস চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। সবার অংশগ্রহণে লালমাই পাহাড় বর্ণিল ফসলে রঙিন হয়ে উঠছে।

সর্বশেষ খবর