সারা দেশে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে ‘ভান্ডারী মুলা’র। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় চাষ হওয়া এই মুলার সর্বোচ্চ ওজন ১৫ কেজি পর্যন্ত। প্রতি বছর মাইজভান্ডার দরবার শরিফের ওরস ঘিরে এই মুলা বিক্রি হওয়ার কারণে ভক্তদের কাছে এটি ভান্ডারী মুলা হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। প্রতি বছরের ১০ মাঘ মাইজভান্ডার দরবার শরিফের ওরসে আসা ভক্তদের কাছে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এই জাপানি মুলার। আর এই ওরস কেন্দ্র করে এ মুলা বিক্রি করে স্থানীয় কৃষকরা।
ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাছানুজ্জামান বলেন, অন্যান্য এলাকার চেয়ে হালদার চরের মাটির গুণাগুণ অনেক বেশি। নদীর পলিমাটির উর্বরতা ও হাইব্রিড জাতের বৈশিষ্ট্যের কারণে মুলার আকৃতি বড় হয়। ফটিকছড়িতে এবার ৪৯০ হেক্টর জমিতে মুলা চাষ হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করছেন এবং কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
জানা যায়, ফটিকছড়ি উপজেলার হালদা নদীর চরের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে চাষ হচ্ছে বড় এ জাপানি মুলা। বিশাল আকৃতির এ মুলা দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমন অন্যরকম স্বাদ। হালদা নদীর কূল ঘেঁষেই বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে মুলা চাষ হয়ে আসছে কয়েক দশক ধরে। মুলার একেকটির ওজন ৫ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত হয়। একটি মুলা ৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। উপজেলার হালদা নদী ধুরুং খালের দুই পাড়ে মুলা চাষে বাম্পার ফলন হয়। এ ছাড়াও নাজিরহাট চরঘোপাড়া, কুম্মারপাড়া, সুয়াবিল, হারুয়ালছড়ি, রোসাংগিরি, সমিতির হাট, সর্তা নদীর পাড়ে খিরাম ও ধর্মপুর, আবদুল্লাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় এ মুলার ফলন হয়। এ মুলা চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।
চাষিরা জানান, ভান্ডারী মুলা একেকটির ওজন ৫ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। বড় আকারের এই মুলা দামে সস্তা ও স্বাদ ভালো হওয়ার কারণে বাজারে চাহিদাও বেড়েছে। হালদার চরে বছরে এ মুলা তিন থেকে চারবার পর্যন্ত চাষ হয়। বিশেষ করে মাইজভান্ডার দরবার শরিফের ওরসের দিন এ মুলার ব্যাপক চাহিদা থাকে।
সারা দেশ থেকে আসা মাইজভান্ডারের ভক্তরা ওরস শেষে এ মুলা বাড়িতে নিয়ে যান। যার কারণে প্রতি বছর এ মুলার চাহিদা ব্যাপক বাড়ছে। এ ছাড়াও মুলা চাষ করে ভালো দাম পাচ্ছি, যার কারণে চাষাবাদেও আগ্রহ বাড়ছে সবার।