মহাজাগতিক রহস্যের অন্যতম হলো কৃষ্ণগহ্বর। জটিল এই বস্তু নিয়ে বিজ্ঞানীরা বহু গবেষণা করলেও এখনো এর পুরোপুরি ব্যাখ্যা মেলেনি। সম্প্রতি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ১২.৯ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এক সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পেয়েছেন, যা পৃথিবীর দিকে শক্তিশালী শক্তির রশ্মি নিক্ষেপ করছে।
এই ব্লেজার থেকে আসা রশ্মি মাত্র ১০০ মিলিয়ন বছর বিগ ব্যাংয়ের পর পৃথিবীতে পৌঁছেছে। এর ফলে নতুন রেকর্ড গড়া সম্ভব হয়েছে, কারণ এত দূর থেকে আসা শক্তিশালী রশ্মি এর আগে কখনো পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। এই আবিষ্কার মহাবিশ্বের শুরুর দিকে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এই ব্লেজারের নাম দেওয়া হয়েছে J0410-0139। এটি ৭০০ মিলিয়ন সূর্যের সমপরিমাণ ভরের অধিকারী এবং এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে পাওয়া অন্যতম প্রাচীন ব্ল্যাক হোল। নাসার চান্দ্রা পর্যবেক্ষণাগার ও চিলির ভেরি লার্জ টেলিস্কোপসহ বিভিন্ন টেলিস্কোপের ডেটা ব্যবহার করে এটি শনাক্ত করা হয়েছে।
জাতীয় রেডিও অ্যাস্ট্রোনমি অবজারভেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. ইমানুয়েল মমজিয়ান জানান, J0410-0139-এর জেট আমাদের দৃষ্টির সরলরেখায় থাকায় এটি মহাবিশ্বের প্রাচীন এক শক্তিশালী ব্লেজারের গভীরে উঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। ব্লেজারটি ব্ল্যাক হোল, জেট এবং তাদের পরিবেশের মিথস্ক্রিয়া বোঝার জন্য এক অনন্য গবেষণাগার হয়ে উঠেছে।
ব্লেজার থেকে নির্গত জেটগুলো লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষব্যাপী বিস্তৃত হতে পারে। আলবার্ট আইনস্টাইনের তত্ত্ব অনুযায়ী, এই কণাগুলো যখন আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে পৌঁছে যায়, তখন এগুলো বিপুল শক্তি নির্গত করে এবং অদ্ভুত আচরণ প্রদর্শন করে।
এ পর্যন্ত প্রায় ৩,০০০ ব্লেজার শনাক্ত করা হয়েছে, তবে J0410-0139-এর মতো এত দূরের ব্লেজার খুব কমই দেখা গেছে। ব্লেজারের জেটগুলোর গঠন ও বিকিরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নন। তবে এই নতুন আবিষ্কার মহাজাগতিক গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল