কয়েক দিন আগে শহীদ আফ্রিদি বললেন, পাকিস্তানে কোনো মেধাবী ক্রিকেটার নেই! এরপরই লর্ডস টেস্ট জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করলো মিসবাহ বাহিনী। ৭৫ রানের আত্মবিশ্বাসী এক জয়। ২০ বছর পর লর্ডসে জয় পেয়েছে পাকিস্তান।
অবশ্য আফ্রিদির কথা নিয়ে খুব একটা আলোচনা-সমালোচনা হয়নি। সবার দৃষ্টি ছিল মোহাম্মদ আমিরের দিকে। পাকিস্তানি এই পেসার ২০১০ সালে এই লর্ডসে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। সেই লর্ডসেই আবার টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করলেন। তবে আমিরের প্রত্যাবর্তন ছিল নিছক সাদামাটা। পাকিস্তানি পেসারকে নিয়ে যতটা আলোচনা হয়েছে ততটা আগ্রাসীভাবে ফিরতে পারেননি মোটেও। দুই ইনিংস মিলে নিয়েছেন মাত্র তিন উইকেট।
তবে আমিরকে নিয়ে বেশ সাবধান ছিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। আর পাক পেসারকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে গিয়েই কিনা বাঁ-হাতি লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহর ঘূর্ণির ফাঁদে আটকে যায় ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। ইয়াসির একাই নিয়েছেন ১০ উইকেট। এটি লর্ডসে একটি নতুন রেকর্ড।পাকিস্তান জিতে যাওয়ায় আড়াল হয়ে গেল ক্রিস ওয়ার্কসের কৃতিত্ব। দুই ইনিংস মিলে ১১ উইকেট নিয়েছেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। প্রথম ইনিংসে ৬ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। ব্যাট হাতেও খারাপ করেননি তিনি। তারপরও দল হেরে যাওয়ায় ম্যাচসেরা হতে পারেননি ওয়ার্কস।
প্রথম ইনিংসে দারুণ ব্যাটিং করেছে পাকিস্তান। মূলত প্রথম ইনিংসে জয়ের ভিত স্থাপিত হয়। ব্যাটিংয়ে বিপদের মুখে দলকে নিরাপদে নিয়ে গেছেন অধিনায়ক মিসবাহ। ক্যাপ্টেন হিসেবে ৪২ বছর বয়সে সেঞ্চুরি করে গড়েছেন অনন্য এক রেকর্ডও। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন আসাদ শফিক। দ্বিতীয় ইনিংসেও দারুণ ব্যাটিং করেছেন আসাদ। তবে লর্ডস টেস্টে আসল লড়াই ছিল বোলারদের। সে জায়গায় ইংলিশদের চেয়ে দাপট দেখিয়েছেন পাকিস্তানের বোলাররা। ইয়াসিরের ঘূর্ণি ঠিকমতো মোকাবিলাই করতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। ইয়াসির শাহর কাছেই যেন হেরে গেছে ইংলিশরা। ৪ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে প্রথমটি জিতে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।
দুর্দান্ত বোলিংয়ের পুরস্কার হিসেবে অ্যান্ডারসনকে টপকে আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠেছেন ইয়াসির। ১১ বছর পর র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে জায়গা করে নিলেন কোনো লেগ স্পিনার। অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন ২০০৫ সালে শীর্ষে ছিলেন। এর আগে সব শেষ পাকিস্তানি লেগ স্পিনারদের মধ্যে শীর্ষে উঠেছিলেন মুস্তাক আহমেদ, ১৯৯৬ সালে।