সোমবার, ৩১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

চেলসি চ্যাম্পিয়ন

চেলসি ১ ০ ম্যানসিটি

রাশেদুর রহমান

চেলসি চ্যাম্পিয়ন

পর্তুগিজ শহর পোর্তোর দ্রাগাও স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে হাজার হাজার চেলসি সমর্থক গলা ফাটাচ্ছেন। পোর্তো শহর থেকে ২ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে অবস্থিত লন্ডনের স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের আশপাশেও চেলসি সমর্থকদের ভিড়। তারা দলীয় কোরাসে চেলসির নাম জঁপ করছে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পেপ গার্ডিওলার দূরন্ত দল ম্যানচেস্টার সিটির স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চেলসি। ২১ বছরের এক জার্মান তরুণ ব্লুজদের স্বপ্ন সারথি হয়ে জয়সূচক গোল করেছেন। অল ইংলিশ ফাইনালে ম্যানসিটির বিপক্ষে চেলসি জয় পেয়েছে ১-০ গোলে।

গত সেপ্টেম্বরে চেলসিতে এসেছেন কাই হ্যাভার্টজ। বায়ার লেভারকুজেনে খেলেছেন বেশ কয়েক বছর। সে সময় ইউরোপা লিগ খেলেছেন। সেখানে গোলও করেছেন বেশ কয়েকটা। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোল করতে যেন মোক্ষম সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। ফাইনালের চেয়ে বড় সুযোগ আর কী হয়! জীবনে গোল খুব বেশি করতে হয় কী! আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা যেমন ২০১০ বিশ্বকাপ ফাইনালে একটা গোল করেই  সারা জীবনের পুঁজি সংগ্রহ করেছিলেন হ্যাভার্টজও অনেকটা তাই করলেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ক্যারিয়ারে প্রথম গোলটা করলেন ফাইনাল মঞ্চে। এক পলকে সব আলো কেড়ে নিলেন তিনি। ম্যানসিটির বড় বড় তারকাদের ছেড়ে চেলসির ২১ বছরের এক জার্মান তরুণের উপর ফোকাস হলো ক্যামেরার সব আলো।

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের মতো মঞ্চে সত্যিই কোনো ফেবারিট হয় না। এর প্রমাণ চেলসির জয়। অনেকেই কাগজে-কলমে ম্যানসিটিকে এগিয়ে রেখেছিলেন। পেপ গার্ডিওলার কৌশল। ম্যানসিটির দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ দল। মিডফিল্ডে কেভিন ডি ব্রুইনের সেনাপতিসুলভ পদচারণা, আক্রমণভাগে ফিল ফোডেনের মতো তরুণের চঞ্চলতা। সবমিলিয়ে ম্যানসিটি অনেক এগিয়েই ছিল। এমনকি মাঠের লড়াইয়ে তারা সেটা প্রমাণও করেছে। ৬০৯টি পাস খেলেছে নিজেদের মধ্যে। ৬১ শতাংশ সময় বল দখলে রেখেছে। ৮৭ শতাংশ পাসিং ছিল নিখুঁত। সবদিক দিয়েই চেলসির চেয়ে নিজেদেরকে সেরা প্রমাণ করেছে ম্যানসিটি। কিন্তু পেপ গার্ডিওলার কৌশলটা আগেই বেশ বুঝতে পেরেছিলেন থমাস টুখেল। সেজন্য বল দখল আর পাসিং ফুটবল নিয়ে তিনি মোটেও ভাবতে যাননি। এক মন্ত্র জঁপেই দলকে মাঠে পাঠিয়েছেন টুখেল। সুযোগ পেলেই গোল দাও। আর কী অবাক কান্ড! ম্যাচের ৪২তম মিনিটে একটা সুযোগেই জয়সূচক গোলটা পেয়ে গেল ব্লুজরা (গোলদাতা কাই হ্যাভার্টজ)। অন টার্গেটে এর আগে পরে আর কোনো শটই নিতে পারেনি চেলসি।

সত্যিই বড় ভাগ্যবান কোচ থমাস টুখেল। পিএসজি হয়তো এখন হাতের আঙুল কামড়াচ্ছে। আর ভাবছে, ইশ! আর কিছুদিন যদি অপেক্ষা করতাম! পিএসজি থেকে ছাঁটাই হয়ে গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে টুখেল দায়িত্ব নেন চেলসির। সে সময় ব্লুজদের খুব খারাপ অবস্থা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আগের আট ম্যাচের পাঁচটিতে হেরে নেমে গিয়েছিল পয়েন্ট তালিকার ৯ নম্বরে। এই কোচের ছোঁয়ায় আমূল বদলে যায় চেলসি। প্রিমিয়ার লিগ তারা শেষ করেছে চতুর্থ হয়ে। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করে সমর্থকদের সব দুখ দূর করে দিলেন টুখেল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর