শিরোনাম
রবিবার, ২৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

মানসিক যন্ত্রণায় নারী ফুটবলাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মানসিক যন্ত্রণায় নারী ফুটবলাররা

গোলাম রব্বানী ছোটন

২০ বছর ধরে ফুটবলে পুরুষ জাতীয় দলের কোনো শিরোপা নেই। ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়ন ছিল শেষ ট্রফি জয়। পুরুষ দল যখন হতাশা ছাড়া কিছুই দিতে পারছে না। তখন নারী ফুটবলারদের জয়-জয়কার। বয়সভিত্তিক দল তো আছেই, নারী জাতীয় দলও দেশকে বিজয়ের ট্রফি উপহার দিচ্ছে। পুরুষ দল যেখানে শিরোপার খরায় বন্দি হয়ে আছে, সেখানে সাবিনা, স্বপ্না, সানজিদারা নেপালের মাটিতে ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। নারী ফুটবলাররা যখন বাংলাদেশের আশা-ভরসার প্রতীকে রূপ নিয়েছেন। তখনই তারা মানসিক যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। এতটা যন্ত্রণা যে অভিমানে তারকা খেলোয়াড় সিরাত জাহান স্বপ্না অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। আর নারী দলের সাফল্যের কারিগর কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও ঘোষণা দিয়েছেন ৩১ মে তিনিও দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।

ছোটন ও স্বপ্নাই শেষ নন। জাতীয় দল এমনকি বয়সভিত্তিক দল থেকে আরও কজনা যে কোনো সময়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন। প্রশ্ন উঠেছে- হঠাৎ করে কী এমন ঘটল যে নারী ফুটবলারদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর জন্য নাকি বাফুফেই দায়ী। কারণ তাদের কথা ও কাজের মধ্যে কোনো মিল নেই। সাফ চ্যাম্পিয়নের পর স্বয়ং সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনই ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশ ও বিদেশে মেয়েরা নিয়মিত টুর্নামেন্টে অংশ নেবে। সে কথা কি রাখতে পেরেছেন সভাপতি? ফ্রান্স অলিম্পিকে বাছাই পর্বেই সাবিনাদের পাঠানো হলো না। অজুহাত দেখাল কী- অর্থ সংকটের কারণে মেয়েদের পাঠানো সম্ভব নয়। এত বড় টুর্নামেন্ট থেকে বঞ্চিত হলো মেয়েরা। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সাবিনারা আশায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী যখন তাদের গুরুত্ব দিয়েছেন তখন বাফুফে সতর্ক হবে। কীসের কী! নারী ফুটবলারদের নিয়ে রীতিমতো তামাশা চলছে। ঘোষণা এলো নারী ফ্রাঞ্চাইজি লিগ মাঠে গড়াবে। জমকালো অনুষ্ঠানে আসরের ট্রফি ও লোগো উন্মোচন হলো। ফ্রাঞ্চাইজি লিগ মানেই টাকার ছড়াছড়ি। নারীরা নিশ্চিত ছিলেন এ থেকে মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক পাবেন। এখানেও তারা বঞ্চিত হতে চলেছেন। এরপর আর ঘোষণা এলো না লিগ কবে থেকে হবে। বাফুফের উইমেন্স কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ অবশ্য বলছেন ফ্রাঞ্চাইজি লিগ হবে। কিন্তু কীভাবে- এখনো তো দলই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

খেলা নেই। অথচ ক্যাম্পে থাকবে নারীরা। আর মাসিক যে বেতন দেওয়া হয় তা রীতিমতো হাস্যকর। এর চেয়ে মানসিক যন্ত্রণা আর কী হতে পারে। স্বপ্না অভিমানেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। এত শিরোপা এনে দেওয়ার পর কোচ ছোটনের গুরুত্ব নেই।

অযোগ্য টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি পাবেন লাখ লাখ টাকার বেতন। ছোটনের সামান্য, এ কি অপমান নয়? শোনা যাচ্ছে ছোটন পদত্যাগের পর নারী ফুটবলারদের অবসর নেওয়ার হিড়িক পড়ে যাবে। তাহলে কি গর্ব করা যায় সেই নারী ফুটবলেও অধপতন নেমে আসবে। বাফুফের এমন কর্মকান্ড দেখেও কি সরকারের উচ্চমহল নীরব থাকবে?

 

সর্বশেষ খবর