সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তানের মাটিতে টি-২০ সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ‘মরুরাজ্য’ আমিরাতে খেলবে ২টি এবং পাকিস্তানে ৫টি ম্যাচ। সিরিজ দুটির জন্য গত দুই দিন ঐচ্ছিক অনুশীলন করেছেন ক্রিকেটাররা। আগামীকাল থেকে পূর্ণ প্রস্তুতি শুরু করবে লিটন বাহিনী। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত লিটন দাসকে টি-২০ ফরম্যাটের অধিনায়ক ঘোষণা করেছে। উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে পুনরায় নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর সরে দাঁড়ানোর কারণে। কিছুদিন আগে নাজমুল তিন ফরম্যাটের নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন। অবশ্য লিটন এর আগেও টাইগারদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নাজমুলের অনুপস্থিতিতে গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশ দলকে টি-২০ সিরিজ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লিটন। টি-২০ সিরিজটি টাইগাররা জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানে। এরপরই টি-২০ ফরম্যাটে নেতৃত্ব দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার। সেই আগ্রহের বিচার বিশ্লেষণ করে টি-২০ ক্রিকেটে লিটনকেই অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেয় বিসিবি। লিটনের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে পুনরায় ক্রিকেটাঙ্গনে জোর আলোচনা বিসিবি কি ফের তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়কের পথে হাঁটতে যাচ্ছে?
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজে টাইগার অধিনায়ক ছিলেন নাজমুল। বিসিবি তাকে জিম্বাবুয়ে সিরিজ পর্যন্ত নিয়োগ দিয়েছিল। লিটনের নেতৃত্বে টাইগাররা এ মাসেই আমিরাত ও পাকিস্তান সফর করবে। শারজাহতে ২টি টি-২০ ম্যাচ খেলবে ১৭ ও ১৯ মে। পাকিস্তানের ফয়সালাবাদে ৩টি টি-২০ খেলবে যথাক্রমে ২৫, ২৭ ও ৩০ মে এবং ১ ও ৩ জুন লাহোরে খেলবে শেষ ২টি টি-২০ ম্যাচ। এ সফর শেষে ১৩ জুন ২টি টেস্ট এবং ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-২০ খেলতে শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা সফরেই হয়তো তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়কের দেখা মিলতে পারে! বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশনস চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই অধিনায়ক হিসেবে ২০২৬ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত লিটনকে মনোনীত করেছি। নাজমুল অধিনায়ক ছিল শুধু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। আমরা সহসাই বসব টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়কের বিষয়ে। তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক হবে কি না, আমরা আলোচনা করিনি। তবে অধিনায়ক মনোনীত করা হবে দীর্ঘমেয়াদি।’
আট বছরের ব্যবধানে ১৩ জুন পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে ‘দ্বীপরাষ্ট্র’ শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছে টাইগাররা। সেখানে হয়তো তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলবে টাইগাররা। এর আগে আরও দুবার তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিনজন অধিনায়ক ছিলেন টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০ ক্রিকেটে। আফ্রিকা সফরে সেবার টেস্ট সিরিজে দলনায়ক ছিলেন মুশফিকুর রহিম। ওয়ানডে সিরিজে মাশরাফি বিন মর্তুজা ও টি-২০ ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান। ২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও তিন অধিনায়ক নেতৃত্ব দিয়েছেন। টেস্ট ক্রিকেটে সাকিব, ওয়ানডে তামিম ইকবাল ও টি-২০ ক্রিকেটে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সাকিব অবসর না নিলেও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে খেলতে পারছেন না জাতীয় দলে। তামিম ও মাহমুদুল্লাহ অবসর নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
শ্রীলঙ্কা সিরিজে যদি তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ককে মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে কে কে হতে পারেন দলনায়ক? টি-২০ অধিনায়ক লিটন দাস। টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেওয়ার রেসে রয়েছেন- নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাওহিদ হৃদয় ও তাসকিন আহমেদ।
বাজে পারফরম্যান্সে র্যাঙ্কিংয়ে অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের। ১৯ বছর পর র্যাঙ্কিংয়ে ১০ নম্বরে নেমেছে টাইগাররা। ২০০৬ সালে সর্বশেষ ১০ নম্বরে ছিল টাইগাররা। ২০২৪ সালের মে থেকে বাজে পারফরম্যান্স করছে টাইগাররা। ৯ ওয়ানডের একটি মাত্র জিতেছে এবং ৭টি হেরেছে। একটি পরিত্যক্ত হয়েছে বৃষ্টিতে। এজন্য ৫ র্যাঙ্কিং পয়েন্ট হারিয়ে এখন ১০ নম্বরে। দলের এই অবনতিতে হতাশা পোষণ করেছেন বিসিবি ক্রিকেট অপারেশনস চেয়ারম্যান, ‘এমন অবনতি অবশ্যই হতাশাজনক। অন্য দেশগুলো যেভাবে এগোচ্ছে, আমরা সেভাবে এগোতে পারছি না। খেয়াল করলে দেখবেন, আইসিসি সহযোগী দেশগুলোও অনেক উন্নতি করেছে। ভালো ক্রিকেট খেলার বিকল্প নেই আমাদের।’