গুঞ্জন গুঞ্জনই থেকে গেল। নতুন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বেশ ক'জনার নাম শোনা যাচ্ছিল। বিশেষ করে শনিবার বিভিন্ন মিডিয়াতে সম্ভাব্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর তালিকায় ক্রীড়াঙ্গনে যাদের নাম এসেছিল। সেই নাম ধরেই ধারণা করা হচ্ছিল এদের মধ্যেই কেউ ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাবেন। টেনিস ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহারিয়ার আলম, নুসরুল ইসলাম বিপু, ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আরিফ খান জয় প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেও কেউ ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন না। প্রতিমন্ত্রীর তালিকায় ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর নামও জোরালোভাবে শোনা গেলেও গতকাল তিনি বঙ্গভবনে শপথ নেননি। অর্থাৎ সাবের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন না। ক্রীড়াঙ্গনের আরেক পরিচিত মুখ নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীরও কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাননি।
নতুন সরকার গঠনের পর বরাবরই ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে চমক থাকে। কেননা কোনো সময় ক্রীড়াঙ্গনের প্রকৃত লোকরা এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাননি। অবশ্য ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের প্রথম ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মির্জা আব্বাস কিছুদিনের জন্য দায়িত্ব পালন করলেও পরে সাদেক হোসেন খোকাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার পর লক্ষ্য করলে দেখা যাবে খোকা ছাড়া কখনো ক্রীড়াঙ্গনের লোকরা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর চেয়ারে বসতে পারেননি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হন ওবায়দুল কাদের। ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বে চারদলীয় সরকারের ফজলুর রহমান পটল ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান আহাদ আলী সরকার। অর্থাৎ এক খোকা ছাড়া ক্রীড়াঙ্গনের দায়িত্ব পেয়েছেন ক্রীড়ার বাইরের লোকরা। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। শপথ নেওয়ার পর গতকাল এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন মাগুরা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত অ্যাড. বীরেন শিকদার। নতুন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যায় শিকদারের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমার মূল লক্ষ্য থাকবে ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন। বাংলার মানুষ খেলাধুলাকে ভালোবাসেন, এ অঙ্গনের উন্নয়ন কীভাবে ঘটান যায় সেদিকেই আমি দৃষ্টি দেব। অনিয়ম বা দুর্নীতি আমার ধারেকাছেও ঘেঁষতে দেবো না। নিজে স্বচ্ছতা বজায় রাখব। অন্যরাও যাতে দুর্নীতি করার সুযোগ না পান সেই চেষ্টাও করব। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরই আমি পর্যায়ক্রমে দেশের সব ফেডারেশনের সঙ্গে বসব। কার কি সমস্যা তা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করব। এবারও ক্রীড়াঙ্গনের বাইরের লোক ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেও এবারই কোনো সরকারে ক্রীড়াঙ্গনের একাধিক ব্যক্তি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন। এর মধ্যে বিসিবির সাবেক সহ-সভাপতির আ হ ম মুস্তফা কামাল, মো. শাহারিয়ার আলম, নুসরুল ইসলাম বিপু ও আরিফ খান জয় এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।