পথে পথে আল্পনা, গাছে গাছে রঙিন বাতি। নগরীর প্রতিটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বিশ্বকাপের লোগো। বিলবোর্ডে পণ্যের বিজ্ঞাপন আড়াল করে খেলোয়াড়দের জন্য শুভকামনার বার্তা। আর নগরীর বিভিন্ন সড়কের পাশে সাঁটানো পথনির্দেশক (ইনডিকেটর) সাইনবোর্ডে তীর চিহ্নের উপরেই লেখা রয়েছে 'সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়াম এইদিকে'। যেনে নগরীর সব পথ গিয়ে মিলেছে সিলেট স্টেডিয়ামে, কিংবা সব পথিকের গন্তব্যই স্টেডিয়াম!
গত কয়েকদিন ধরেই বিশ্বকাপের রঙে সেজেছে সিলেট। পুরো নগরীই যেনে হয়ে উঠেছে উৎসবের নগরী।
নগর পুড়লে নাকি দেবালয় এড়ায় না, আর নগর উৎসবের রঙে সাজলে? সেই উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে উঠেন নগরবাসীও। গত কয়েকদিন ধরে সিলেট নগরীর সবার মুখে মুখেই তাই ক্রিকেট ক্রিকেট আর ক্রিকেট।
'কাঠের ঠুকরো নিয়ে একটা বলকে সারাদিন পেটানোতে কী আনন্দ নিহিত আছে?' তা এতোদিনেও আবিষ্কার করতে না পারা বৃদ্ধ থেকে শুরু করে 'সারাদিন ক্রিকেট খেলা দেখা মানে সময় নষ্ট করা' এই মনোভাবের তরুণের মুখেও এখন বিশ্বকাপের খবরাখবর। সিলেটের মাঠে কোন কোন দল খেলছে আর বাংলাদেশকে মূল পর্বে খেলতে হলে কী করতে হবে- এমন খুঁটিনাটি তথ্যও এখন তাদের নখদর্পণে। বিশ্বকাপ এমনই এক যাদুর কাঠি!
আর হবেই না বা কেন, এই বিশ্বকাপেই তো প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ভেন্যু পেলো সিলেট। গতকাল সোমবার আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ের ম্যাচের মধ্য দিয়ে অভিষিক্ত হলো সিলেট স্টেডিয়াম। যে সৌন্দর্য নিয়ে এতোদিনে বিস্তর লেখা হয়েছে। নতুন করে কিছু লেখা মানে পূর্বপাঠের পুনারালোচনা মাত্র।
সোমবার সিলেট স্টেডিয়ামে প্রথম খেলা শুরু হয় বেলা সাড়ে ৩টায়। তবে দুপুর থেকেই ছিলে স্টেডিয়ামুখী দর্শকদের লাইন। বিক্রির জন্য টিকেট উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর থেকেই সিলেটে টিকেট নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়। গতকালও অনেককে টিকেট কিনতে গিয়ে না পেয়ে ফিরে আসতে দেখা যায়।
সোমবার একে তো ছিল সরকারি ছুটি, তার উপর সিলেট ভেন্যুর উদ্বোধন। তাই দর্শকদের ঢলও ছিলে বেশি। সেই দর্শকঢলেই সূচনা ঘটলো টি-২০ বিশ্বকাপের সিলেটপর্বের। ক্রিকেটানন্দের শহরে এলো বিশ্বকাপ।