বাংলাদেশের ফুটবল এখন ঢাকাকেন্দ্রিক। জাতীয় পর্যায়ের যে কোনো ধরনের ফুটবল কিংবা আন্তর্জাতিক যে কয়টা ম্যাচ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়, তার সবগুলোই ঢাকাতে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ফুটবলকে ছড়িয়ে দেওয়া কিংবা ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের প্রতি তেমন কোনো খেয়ালই নেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের। এমতাবস্থায় অনেকটা হুট করেই সিলেটে বাংলাদেশ ও নেপাল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচটি সিলেটে আয়োজনের উদ্যোগ নেয় বাফুফে। সিলেটে প্রথমবারে মতো অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ম্যাচটি দেখতে গতকাল ফুটবলপ্রেমীদের ঢল নেমেছিল সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। একপর্যায়ে স্টেডিয়ামের দুটি প্রবেশপথ ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়ে হাজারো দর্শক।
একসময় আবাহনী-মোহামেডান ফুটবল ম্যাচ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করত ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে। এখন আন্তর্জাতিক ম্যাচেও দেখা মেলে না দর্শকদের। ফুটবল নিয়ে আগের সেই উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা কিছুই আর অবশিষ্ট নেই ঢাকায়। আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচকে ঘিরে কথার লড়াই, মিছিল, উন্মাদনা- এর সবকিছুই সেই কবে হারিয়েছে! বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল লিগ এমনকি কোটি টাকার সুপার কাপও এখন আর দর্শক টানে না ঢাকার মাঠে।
ঘরোয়া ফুটবল তো বটেই, আন্তর্জাতিক ম্যাচেও খালি পড়ে থাকে গ্যালারির সিংহভাগ অংশ! এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্টরা যখন মনে করছেন দেশের ফুটবলের উন্মাদনা চোরাবালিতে হারিয়ে যেতে বসেছে, ঠিক তখন প্রথমবারের মতো সিলেটে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বনাম নেপালের মধ্যকার আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচটি সংশ্লিষ্টদের চক্ষু চড়কগাছ করে দিল! হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমীর ফুটবল উন্মাদনা দেখে চোখ কপালে তোলা ছাড়া উপায় ছিল না স্বয়ং বাফুফে কর্মকর্তাদের। দেশের ফুটবলে এমন উচ্ছ্বাস, এমন উন্মাদনা, এমন স্বতঃস্ফূর্ততা অনেক বছর ধরেই দেখেননি বাফুফে কর্মকর্তা কিংবা দেশের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষেরা। বিকাল ৫টায় ম্যাচটি শুরু হওয়ার জন্য নির্ধারিত থাকলেও প্রবল দর্শক চাপ সেটি হতে দেয়নি। বিকাল ৪টায় ২৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়াম গ্যালারি কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। একপর্যায়ে দর্শক চাপে ম্যাচ আয়োজনে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়। তখন আইনশৃঙ্খলার রক্ষাকারী বাহিনী, বাফুফে কর্মকর্তা ও সিলেট জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের নিরলস চেষ্টায় সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয় ম্যাচটি।