দৃষ্টিনন্দন টাহুনা বিচ। শহরের ঠিক বাইরে নয়। আবার ভিতরেও নয়। নেলসনবাসীর আদরের নাম 'ক্যারিবীয়ান বিচ'। ক্যালিপসো ঝাঁজ নেই। নেই উদ্যমতা। তারপরও সুবজ অরণ্য আর পাহাড় ঘেরা টাহুনা বিচের আমন্ত্রণে দলে দলে লোক আসেন পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে। নেলসনের গর্ব এই টাহুনা বিচ। নেলসন আবার নিউজিল্যান্ডের গর্ব। তাসমান সাগরের তীরঘেঁষা সবুজ বৃক্ষরাজি, রুক্ষ্ন-রুদ্র পাহাড়ের নেলসন সৌন্দর্য্যের অাঁধারও! ছিমছাম, কোলাহলমুক্ত ও সাজানো-গোছানো নেলসনের প্রেমে পড়া খুবই স্বাভাবিক। নগরীর কেন্দ্রস্থলে রাদারফোর্ড হোটেলে বসে দূর পাহাড়ের সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কাল জিম করতে যাওয়ার আগে নেলসনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হওয়ার কথা বলেন সাব্বির রহমান রুম্মন। প্রথমবারের মতো নেলসনে খেলতে নামাকে স্মরণীয় করে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সাব্বির। শুধু ব্যক্তিগত নয়, দলীয় সাফল্যও চান সাব্বির। পরাজিত করতে চান স্কটল্যান্ডকে।
শ্রীলঙ্কা ম্যাচের একদিন পর মেলবোর্ন ছাড়েন ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটের স্বর্গ মেলবোর্ন থেকে মাশরাফিবাহিনী ক্রাইস্টচার্চ হয়ে আসেন নেলসন। ক্রাইস্টচার্চ থেকে আসার পর ছোট্ট বিমানে দক্ষিণের জানালা নেলসনে আসেন। ক্রিকেটাররা আসলেও তাদের লাগেজ আসে অনেক সময় পর। দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি জুড়াতে গতকাল অনুশীলন ছিলনা ক্রিকেটারদের। তবে একেবারে বিশ্রামেও কাটাননি। হোটেলের বাইরে জিমে সময় কাটান। জিমে যাওয়ার আগে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ৫৩ রানের ইনিংস খেলা সাব্বির জানান একটি স্বপ্ন পূরণের কথা। বাকি রয়েছে আরও একটি স্বপ্ন, 'আমি যখন থেকে ক্রিকেট খেলছি, তখন থেকেই স্বপ্ন ছিল লর্ডস ও মেলবোর্নে খেলার। আল্লাহর ইচ্ছায় মেলবোর্নে খেলেছি। এখন লর্ডসে খেলতে চাই।'
বিশ্বকাপে সাফল্য পেতে ২৪ জানুয়ারি ঢাকা ছাড়ে টাইগাররা। ব্রিসবেনে দুই সপ্তাহের ক্যাম্প করে বিশ্বকাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ। তিনটি ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপে। আফগানিস্তানকে হারিয়ে সূচনা ভালো করে টাইগাররা। কিন্তু বৃষ্টির জন্য দ্বিতীয় ম্যাচে খেলা হয়নি। মেলবোর্নে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার কাছে হারে ৯২ রানে। ক্রিকেট মহাযজ্ঞের তিন ম্যাচ খেলে এই প্রথম নিউজিল্যান্ড উড়ে আসে বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে সৌন্দর্যের অাঁধার নেলসনে। অস্ট্রেলিয়ায় খেলার অভ্যাস নিয়ে নিউজিল্যান্ডে এসে বিপরীতমুখি কন্ডিশনে এসে কতটা সাফল্য পাবে দল? সাব্বিরের মতে কোনো সমস্যা হবে না, 'এখানে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে আবহাওয়া ভিন্ন। কিন্তু আমি মনে করি উইকেটের বাউন্স একই রকম। এখানে হয়তো বাতাসের জন্য সুইং বেশি হবে। কিন্তু এখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছি আমরা। ৩-৪ দিন অনুশীলন করে আমরা কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিব।'
দ্বীপরাষ্ট্রের কাছে হেরে টাইগাররা মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়েছে অনেকটাই। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো একটু কষ্টকর। তবে সাব্বির মনে করেন না, হারের জন্য মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে দল, 'আমরা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো খেলতে পারিনি। আমরা চেয়েছিলাম তাদেরকে ২৮০-২৯০ রানে আটকে রাখতে। কিন্তু আমাদের বাজে ফিল্ডিংয়ে তারা ৩৩২ রান করে। যদি ক্যাচগুলো নিতে পারতাম, তাহলে আমরা তাদের হারাতে পারতাম। একইভাবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা ফেবারিট। যদি আমরা নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারি, তাহলে সহজেই জিতব।'
বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকেই ব্যাটিং অর্ডার সাজানো নিয়ে সমালোচিত হচ্ছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। দলের দুই সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং অর্ডার ৬-৭'এ খেলানো হয়। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডারে কোনো পরিবর্তন হবে কি না, উত্তরে সাব্বির বলেন, 'সত্যি বলতে এই বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না। টিম ম্যানেজমেন্ট ব্যাটিং অর্ডার ঠিক করেন। আমার টার্গেট শতভাগ উজার করে খেলা।'