একটি টিকিটের আশায় কাকডাকা ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে কলেজ ছাত্র সুমন সাহরিয়ার। টানা ৪ ঘণ্টা ঘাম ঝরিয়ে টিকিটের দেখা পান। কিন্তু তাদের লাইনের একটু পাশেই কালোবাজারে টিকিট বিক্রি হতে দেখে হতাশ হয়েছেন সাহরিয়ার। বললেন- একটি টিকিট পেতে রিতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে। অথচ আমাদের সামনেই কালোবাজারি চক্র চড়া দামে হরদম বিভিন্ন মূল্যমানের টিকিট বিক্রি করেছে। কালোবাজারিরা এত টিকিট পায় কোথায়? আবার যারা ঘাম ঝরিয়ে ব্যাংক থেকে টিকিট কিনতে সক্ষম হয়েছেন, তাদের গুনতে হয়েছে ভ্যাট বাবদ বাড়তি শতকরা ১৫ টাকা! অনেকে বিকাল পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত দিনের টিকিট না পেয়ে হতাশা নিয়ে ফিরেছেন বাড়ি। গতকাল সরেজমিন জানা গেছে, ইউসিবি কেডিঘোষ রোডের শাখা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সার্ভার সমস্যার কারণে ইউক্যাশের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি বন্ধ ছিল। ফলে টিকিট প্রত্যাশীরা খানজাহান আলী রোড শাখায় ভিড় করেন। সেই সঙ্গে টিকিট বিক্রিতে ধীরগতি লাইনে দাঁড়ানো মানুষগুলোকে ভুগিয়েছে। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে কালোবাজারি চক্র। ইউসিবি খানজাহান আলী শাখার সামনের সড়কে ভিড়ের মধ্যে প্রকাশ্যে কালোবাজারি চক্রকে চড়া দামে টিকিট বিক্রি করতে দেখা যায়। এই চক্রে কয়েকজন কিশোর, তরুণ প্রকাশ্যে চড়া দামে টিকিট বিক্রি করে। আবার স্থানীয় সরকারদলীয় অসংখ্য নেতা-কর্মিকে ব্যাংকের ভিতর থেকে ইউসিবি লোগো সম্বলিত খামে ভর্তি করে টিকিট আনতে দেখা যায়। কলেজ ছাত্র মো. কাফি বলেন, কালোবাজারিদের সঙ্গে অনেক দেন দরবার করে ৫০ টাকা দামের টিকিট ১০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। একই টিকিট ১৫০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে বলে জানান। ঘাম ঝরানো কষ্টের পরও যারা ব্যাংক থেকে টিকিট কিনতে পেরেছেন তাদের বাড়তি ভ্যাট দিতে হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে খুলনা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট টিকিটেও টিকিট মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত ভ্যাট নেওয়া হয়েছিল। এবারও একইভাবে টিকিটের নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নিচ্ছে ব্যাংক কর্তৃর্পক্ষ। ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ইস্টার্ন গ্যালারির ২০ টাকার টিকিট ২৩ টাকা, ওয়েস্টার্ন গ্যালারি ৫০ টাকার টিকিট ৫৮ টাকা, কাব হাউজ ৭৫ টাকার টিকিট ৮৬ টাকা ২৫ পয়সা। ইন্টারন্যাশনাল গ্যালারি ১০০ টাকার টিকিট ১১৫ টাকা, গ্রাউন্ড স্ট্যান্ড ৩০০ টাকার টিকিট ৩৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ইউসিবি খানজাহান আলী রোড শাখা প্রধান মাহবুব ফারুকী বলেন, ইউসিবি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী টিকিট মূল্যের অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ ভ্যাট নেওয়া হচ্ছে।