খুলনা কখনো খালি হাতে ফেরায়নি টাইগারদের। তিন তিনটি টেস্টে হার-জিত-ড্র সবই হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের টেস্টেও রেকর্ড গড়েছিলেন আবুল হাসান রাজু। ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরি করেছিলেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নিয়ে সাকিব আল হাসান নাম লিখেন দুই লিজেন্ড ইমরান খান ও ইয়ান বোথামের পাশে। সেই খুলনা এখন রেকর্ডের ভেন্যু। পাকিস্তানের বিপক্ষে একের পর এক রেকর্ড গড়ে ইতিহাসের পাতাকে সমৃদ্ধ করেছেন তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েশ, মোহাম্মদ হাফিজ। ড্র করে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল বাংলাদেশ।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৫৫ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টের তৃতীয় ইনিংসে প্রথমবারের মতো ৩০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এর আগে ১৯৬০ সালে ওভালে ঘরের মাঠে ইংলিশ ওপেনার কলিন কাউড্রে-পুলার জুটি তৃতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৯০ রানের জুটি গড়েছিলেন। ওই ম্যাচে কাউড্রে ১৭৫ ও পুলার ১৫৫ রান করেছিলেন।
উদ্বোধনী জুটিতে তামিম-ইমরুলের ৩১২ রান দেশের পক্ষে যে কোনো জুটিতে সর্বোচ্চ। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে ৫ম উইকেট জুটিতে মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিম করেছিলেন ২৬৭ রান। দুই বছর পর খুলনার আবু নাসের স্টেডিয়ামে এই রেকর্ড ভাঙলেন তামিম ও ইমরুল। তৃতীয় ইনিংসে তামিম ২০৬ ও ইমরুল ১৫০ রান করেন। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ সাত সেঞ্চুরির মালিকও তামিম ইকবাল।
এদিকে ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার গলে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে ২০০ রান করেন মুশফিকুর রহিম। খুলনা টেস্টে ২০৬ রান করে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন তামিম। শনিবার টেস্টের শেষ দিনে তামিম ২৭৮ বলে ১৭ চার ও সাত বিশাল ছক্কায় ২০৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে মোহাম্মদ হাফিজের শিকার হন। তামিম এর আগে ২০১০ সালে ভারতের বিরুদ্ধে ঢাকায় ১৫১ রান করেছিলেন।
খুলনা টেস্টে ইমরুল কায়েসের ১৫০ রান তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম টেস্টে তার রান ছিল ১৩০। ইমরুল ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করেন এই টেস্টে।
খুলনা টেস্টে রয়েছে বাংলাদেশি বোলার ও পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের আরও কিছু অর্জন। এই টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ইসলাম ৬ উইকেট নিয়েছেন।
পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজের ডাবল সেঞ্চুরির মাইল ফলক স্পর্শ করতে তিন বছরের অপেক্ষা শেষ হয়েছে এই ম্যাচে। ২০১২ সালে কলোম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৯৬ ও ২০১৪ সালে শারজায় নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৯৭ রানে আউট হলেও খুলনায় খেলেছেন ২২৪ রান আলোকিত ইনিংস।
স্কোর কার্ড
বাংলাদেশ : প্রথম ইনিংস, ৩৩২/১০, ১২০ ওভার (তামিম ইকবাল ২৫, ইমরুল কায়েশ ৫১, মুমিনুল হক সৌরভ ৮০, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৪৯, সাকিব আল হাসান ২৫, মুশফিকুর রহিম ৩২, সৌম্য সরকার ৩৩। ওয়াহাব রিয়াজ ৩/৫৫, ইয়াসির শাহ ৩/৮৬) ও দ্বিতীয় ইনিংস, ৫৫৫/৬, ১৩৬ ওভার ( তামিম ইকবাল ২০৬, ইমরুল কায়েশ ১৫০, মুমিনুল হক ২১, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৪০, সাকিব আল হাসান ৭৬*, সৌম্য সরকার ৩৩, শুভাগত হোম ২০*। জুনায়েদ খান ২/৮৮, মোহাম্মদ হাফিজ ২/৮২)।
পাকিস্তান: প্রথম ইনিংস, ৬২৮/১০, ১৬৮.৪ ওভার ( মোহাম্মদ হাফিজ ২২৪, সামি আসলাম ২০, আজহার আলি ৮৩, ইউনিস খান ৩৩, মিসবাহ উল হক ৫৯, আসাদ শফিক ৮৩, সরফরাজ আহমেদ ৮২। তাইজুল ইসলাম ৬/১৬৩, শুভাগত হোম ২/১২০, মোহাম্মদ শহীদ ১/৫৯)।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : তামিম ইকবাল
ফল : ড্র