পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের আগেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বাংলাদেশকে ফেবারিট হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন অনেকে বিষয়টিকে নিছক হাস্যকর মনে করেছিলেন। কিন্তু পরে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজে পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ করার পর সাকিবের ভবিষ্যদ্বাণীর গুরুত্ব বোঝা গেছে।
আগামী জুন মাসে বাংলাদেশে আসছে ভারত। তারা স্বাগতিকদের সঙ্গে তিনটি ওয়ানডে ও একটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে। তাহলে এবার ভারতের বিরুদ্ধেও কি বাংলাদেশ ফেবারিটের তকমা গায়ে মেখে খেলতে নামবে? পাকিস্তানকে টাইগাররা যেভাবে নাস্তানাবুদ করেছে তা দেখে ক্রীড়ামোদীদের মনে হতেই পারে বাংলাদেশই ফেবারিট। কেননা পাকিস্তান তো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওয়ানডে ও টি-২০তে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ে তুলতে পারেনি। তাছাড়া ঘরের মাঠে টাইগাররা আত্দবিশ্বাসের তুঙ্গে। তার পরেও এবার বাংলাদেশকে একতরফাভাবে ফেবারিট বলতে রাজি নন সাকিব আল হাসান।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার মনে করেন, পাকিস্তান আর ভারত এক মাপের দল নয়। পাকিস্তানে তরুণ ক্রিকেটার ছিল অনেক বেশি। সে তুলনায় ভারত অনেক বেশি অভিজ্ঞ। তাছাড়া এটা তো ঠিক যে, বাংলাদেশের কন্ডিশন সম্পর্কেও পাকিস্তানের চেয়ে ভারত ভালো জানে। তাই এই সিরিজটা কঠিনই হবে বলে মনে করেন সাকিব।
ভারতের বিরুদ্ধে সব শেষ সিরিজে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার ভারতের সেরা একাদশের অনেকেই আসেনি। এবার শোনা যাচ্ছে, বিরাট কোহলি ও মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো বড় তারকারা আসবেন না। ভারতের ওয়ানডে দলকে নেতৃত্ব দেবেন রোহিত শর্মা! এবারের সফরে আসার কথা অভিজ্ঞ জহির খান, হরভজন সিং, যুবরাজ সিং ও বীরেন্দর শেবাগের। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তাদের তারকা ক্রিকেটারদের মাঠ থেকে বিদায় জানানোর সুযোগ করে দিতেই দলে নিতে যাচ্ছে।
ভারতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারের ক্যারিয়ারটা উজ্জ্বল হলেও তাদের শেষটা ভালো হয়নি। ভারতীয় দলকে অনেক দিন সার্ভিস দেওয়ার পর তারা মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারেননি। সে কষ্টটা সারা জীবন ওই ক্রিকেটারকে ভুগিয়েছে। তাই এবার মাঠ থেকে সম্মানে বিদায় নেওয়ার সুযোগ করে দিতেই সিনিয়রদের দলে নেওয়া হচ্ছে।
তাই বলে যে দলটা দুর্বল হবে- এমন ভাবার উপায় নেই! কেননা ভারতের এই সিরিয়র ক্রিকেটাররা জাতীয় দলে এখন নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছেন না ঠিকই, কিন্তু ঘরোয়া লিগে তারা এখনো তারকা। নিয়মিত ভালো বোলিং করছেন, রান পাচ্ছেন। বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে। তবে এটাও ঠিক, বিশ্বকাপের আগের বাংলাদেশ আর এই বাংলাদেশের মধ্যে পার্থক্য আকাশ-পাতাল। ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ যখন সিরিজ হেরেছিল তার আগে হারতে হারতে টাইগারদের 'আত্দবিশ্বাস' তলানীতে এসে ঠেকেছিল। সে কারণেই ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্বকাপের পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সব শেষ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর টাইগাররা এখন আত্দবিশ্বাসের তুঙ্গে। মাশরাফিরা যদি নিজেদের স্বাভাবিক গতিটা এই সিরিজে ধরে রাখতে সমর্থ হয়, তবে ভারতের বিরুদ্ধেও ফল পক্ষেই আসার কথা। কিন্তু টেস্টে বোলিংয়ের দুর্বলতাটা চোখে পড়ার মতো। ওয়ানডেতে পেসে মাশরাফি, তাসকিনের পাশাপাশি আরাফাত সানির স্পিন। কিন্তু টেস্টে তাদের অনুপস্থিতিতে বোলিং লাইনআপ অনেক দুর্বল। তাই টেস্টে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। তবে এবার ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে আশাবাদী হতেই পারে বাংলাদেশ!