এক সময় জার্সি নম্বর ছাড়াই ফুটবলার চেনা যেত। দূর থেকে বলা যেত ওই যে কায়সার বা আসলাম। এখন আর সেই দিন নেই। তারকা বলতে যা বুঝায় সেই মানের খেলোয়াড় নেই বললেই চলে। যা আছেন তা হাতেগোনা কয়েকজন। এর মধ্যে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের জাহিদ হোসেন এমিলির নাম অন্যতম। এক সময় সালাউদ্দিন, এনায়েত, আসলাম বা আলফাজকে দেশসেরা স্ট্রাইকার বলা হতো। কত অসাধারণ গোল যে তারা করেছেন তা ভুলবার নয়। এমিলিও রীতিমতো মাঠ কাঁপাচ্ছেন। দল ও দেশের হয়ে চোখে ধরার মতো অনেক গোল করেছেন। ২০০৫ সাল থেকে নিয়মিত জাতীয় দলে খেলছেন। মাঝে দেশকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। টানা ১০ বছর ধরে জাতীয় দলে খেলেছেন এমন ফুটবলারের সংখ্যা দেশে কমই বলা যায়। এক্ষেত্রে এমিলি সত্যিই ব্যতিক্রম। ফর্ম ধরে রেখে দেশসেরা স্ট্রাইকারের খেতাব পেয়ে গেছেন। ক্রিকেটে যেমন সাকিব ছাড়া জাতীয় দল চিন্তা করা যায় না তেমনি ফুটবলেও এমিলি। কিন্তু এই এমিলিকে সাম্প্রতিককালে এমিলি রূপে দেখা যাচ্ছে না। তার মতো স্ট্রাইকারও সহজ সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করছেন। আগামীকাল বাংলাদেশ খেলবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। প্রতিপক্ষ কিরগিজিস্তান। প্রাকপর্ব পেরিয়ে বাংলাদেশ অনেক দিন পর সরাসরি বাছাই পর্ব খেলছে। গ্রুপে আছে কিরগিজিস্তান ছাড়াও তাজিকিস্তান, জর্ডান ও অস্ট্রেলিয়া। প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রথম তিন দল শক্তিশালী কিন্তু অস্ট্রেলিয়াকে দেখতে হবে আলাদা চোখে। ক্রিকেটে তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ফুটবলেও কম যায় না। বিশ্বকাপ চূড়ান্ত পর্বে খেলা ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া, ইরানের মতো শক্তিশালী দলকে পেছনে ফেলে এশিয়া কাপ জয় করেছে অস্ট্রেলিয়া। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে বাছাইপর্বে দুবার লড়তে হবে তাদের বিরুদ্ধে। সুতরাং অস্ট্রেলিয়া যেখানে আছে এই পর্ব পেরিয়ে বাংলাদেশের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়া সম্ভব নয়। তাহলে বাছাইপর্বে বাংলাদেশের টার্গেট কি? এমিলি বললেন, বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব ফুটবলে মর্যাদাকর আসর। এখানে লড়াই করে ৩১টি দেশ স্বপ্নের বিশ্বকাপে চূড়ান্ত পর্বে খেলবে। বাংলাদেশের কি চূড়ান্ত পর্বে যাওয়া সম্ভব? এমিলি হাসতে হাসতে বললেন, যা সম্ভব নয় সেই প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য থাকবে বাছাইপর্বে ভালো খেলা। বৃহস্পতিবার কিরগিজিজস্তান ও ১৬ জুন তাজিকিস্তানের বিপক্ষে লড়বো। দুটো ম্যাচই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। ঘরের মাঠে আমরা দুই ম্যাচ জিততেই মাঠে নামব। জিতবেন এই নিশ্চয়তা কি দিতে পারবেন? দেখেন ফুটবলে কোনো ম্যাচেই কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারবে না জয়ের?
আমরা দুটো ম্যাচকে সামনে রেখে লিগের প্রথম পর্ব শেষের পরই অনুশীলন শুরু করেছি। সিঙ্গাপুর ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। জিততে পারিনি, কিন্তু ভুল-ত্রুটি খুঁজে পাওয়া গেছে। যা আমাদের উপকারে আসবে। আশা রাখি ঘরের মাঠে কিরগিজিস্তান ও তাজাকিস্তানের বিপক্ষে জ্বলে উঠব এবং জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ব।