দক্ষিণ আফ্রিকা ‘চোকার্স’। বড় টুর্নামেন্টে ভালো খেলতে পারে না। চাপে পড়লে ভেঙে পড়ে। ক্রিকেটবিশ্বে প্রোটিয়াদের নিয়ে আরও অনেক দুর্নাম আছে! কিন্তু এই দক্ষিণ আফ্রিকা যখন বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হয় তখন ভয়ঙ্কর এক দল। খুনে ম্যাজাজের এক দল। যারা প্রতিপক্ষকে সামনে পেলে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ছুড়ে ফেলে। টাইগারদের আতঙ্কের নাম দক্ষিণ আফ্রিকা -রেকর্ডবুক ঘাটলে এমনটা মনে হওয়া খুবই বাস্তব!
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ওয়ানডেতে এ যাবত মোট ১৫ বার খেলার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। যার মধ্যে ১৩ ম্যাচেই হেরেছে টাইগাররা। শুধু ‘হেরেছে’ বললে ভাব অসম্পূর্ণই থেকে যাবে! ওই ১৩ ম্যাচে ছিল না প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচও। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিটি জয়ই বিশাল বিশাল।
সব শেষ ২০১১ সালের মার্চে ঢাকায় বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলা ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ২০৬ রানের বড় ব্যবধানে। টাইগারদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিু জয়ের ব্যবধানটা ছিল ৬১ রানে। প্রোটিয়ারা বাংলাদেশকে ১০ উইকেটেও হারিয়েছে দুইবার। তবে ২০০৮ সালে পূর্ব লন্ডনের বাফেলো পার্কে একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেছে।
কিন্তু ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষ এই দক্ষিণ আফ্রিকাকেও কাঁপিয়ে দেওয়ার ইতিহাস আছে টাইগারদের। সেটা ২০০৭ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে। গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে প্রোটিয়াদের ৬৭ রানে হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একমাত্র জয়। ইতিহাস গড়া এক জয়।
বিশ্বকাপের ওই আসরে হাবিবুল বাশার সুমনের বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব ‘মহাশক্তিধর’ ভারতকে বিদায় করে দিয়ে উঠেছিল সুপার-এইটে। ভাবছেন, ভারতকে কেন মহাশক্তিধর বলা হলো? শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলি, বিরেন্দর শেবাগ, মহেন্দ্র সিং ধোনি -কে ছিলেন না সেই দলে। অন্যদিকে বোলিংয়ে তখন টগবগে হরভজন সিং ও জহির খান। এ পর্যন্ত বিশ্বকাপে ভারতের সেরা দল ছিল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে ২০০৭-র ওই দলটি। -এমন একটি দলকে বিদায় করে দেওয়ার পর সুপার-এইটে টাইগাররা বধ করে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একমাত্র মধুর স্মৃতি। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে মাশরাফিদের স্মৃতিপটে কী সেই ‘গায়ানা’ কাব্য উঁকি দিচ্ছে না! বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল এবং পাকিস্তান ও ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর টাইগাররা এখন আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। এমন অবস্থায় প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে পরাজয়ের সেই দুঃস্মৃতিগুলো তাড়িত না করারই কথা। তবে গায়ানার সেই জয়টি যে টাইগারদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করবে -তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের স্পিনের কাছেই কুপোকাত হয়েছিল আফ্রিকানরা। মোহাম্মদ রফিকের সেই জাদুকরী স্পিন বোলিং এখন ক্রিকেটামোদীরা ভুলতে পারেননি। ১০ ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়েছিলেন। আরেক স্পিনার আবদুর রাজ্জাকও ছিলেন ভীষণ কিপটে! মাত্র ২৫ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। তারপরেও ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের হাতে। ৮৩ বলে ৮৭ রান করেছিলেন অ্যাশ।
ধীরগতির হলেও তামিমের ৩৮ রানের ইনিংসটা বাংলাদেশের ভীতকে শক্ত করে দিয়েছিল। মাশরাফির মাত্র ১৬ বলে ২৫ রান গায়ানার দর্শকদের আনন্দে মাতিয়েছিল। সেই ম্যাচে ছিলেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমও। দক্ষিণ আফ্রিকা বধের সাক্ষী সেই চার ক্রিকেটার এখন বাংলাদেশ দলের মেরুদণ্ড।
অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা এই দলের মাত্র একজন ক্রিকেটারই ওই ম্যাচে খেলেছিলেন- অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। বাংলাদেশের স্পিন যে তা খুব ভালো করেই টের পেয়েছিলেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক ভিলিয়ার্স ওই ম্যাচে ৩৯ বল খেলে করেছিলেন মাত্র ১৫ রান।
দক্ষিণ আফ্রিকার যত ভয় বাংলাদেশের স্পিনকে। কিন্তু এখন টাইগারদের পেস আক্রমণও তো বিপজ্জনক। দুই দুজন বোলার (তাসকিন ও রুবেল) নিয়মিত ১৪০ কিমির ওপর গতিতে বল করে থাকেন। সেই মাশরাফির নিখুঁত লাইনলেন্থ। আর নতুন করে যোগ হয়েছে মুস্তাফিজের ‘কাটার’। সেই সঙ্গে রয়েছে লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ। তবে বাংলাদেশের বড় শক্তি বোধহয় কোচ হাতুরাসিংহের দূরদর্শী মস্তিষ্ক! লঙ্কান কোচ কিভাবে যেন আগেই বুঝে ফেলেন প্রতিপক্ষের পরিকল্পনা। তারপর ছক কষে করে দেন বাজিমাৎ। হাতুরার ঠাণ্ডা মাথার জাদু বিশ্বকাপ, পাকিস্তান ও ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজে দেখে ক্রিকেটবিশ্ব। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজেও কী অপেক্ষা করছে চমক কিছু...!
শিরোনাম
- ট্রেলার উন্মোচন ঘিরে বিতর্ক, ক্ষোভে ফুঁসছেন দেবলীনা
- নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র বিএনপি মানবে না : সেলিমা রহমান
- ঝালকাঠিতে হেলে পড়েছে পাঁচতলা ভবন, আতঙ্কে আশপাশের বাসিন্দারা
- শেবাচিম হাসপাতালে সচল হলো ৯৫টি অচল যন্ত্র
- আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ: মামুনুল হক
- বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের সূচি ঘোষণা আফগানিস্তানের
- ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতির চেতনা ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করা’
- সামনে নির্বাচনে আপনারা শাঁখা-সিঁদুর পরে ভোট দিতে যাবেন: স্বরাষ্ট্র সচিব
- সব সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের অগ্রযাত্রাকে শক্তি যোগাবে: উপদেষ্টা
- শেরপুরে সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টা
- বিএনপি পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার দল নয় : ডা. জাহিদ
- পরিবহন সেক্টরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে : শিমুল বিশ্বাস
- চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর হাতের কবজি কাটল সন্ত্রাসীরা
- নতুন প্রজন্মের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি মাদক: এড. বোরহান
- আওয়ামী লীগ আমলের সব খুন-হত্যার বিচার করা হবে : গয়েশ্বর
- বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে অস্ট্রেলিয়ায় দোয়া অনুষ্ঠিত
- নবীনগরে কৃষকদলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
- চার শাখার সঙ্গে জরুরি সভা ডেকেছে ছাত্রদল
- পাহাড়ে পর্যটক সংকট
- গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশের জন্য নির্বাচন অপরিহার্য : জিল্লুর রহমান
স্মৃতিপটে ‘গায়ানা’ কাব্য
মেজবাহ্-উল-হক
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর