বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব ফুটবলে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত দুটো ম্যাচে অংশ নিয়েছে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ খেলায় কিরগিজস্তানের কাছে হার ও তাজিকিস্তানের সঙ্গে ড্র করেন মামুনুলরা। ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ গ্রুপের পরবর্তী ম্যাচ লড়বে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর জর্ডানের বিপক্ষে মুখোমুখি হবে। আগের দুই প্রতিপক্ষের চেয়ে অস্ট্রেলিয়া ও জর্ডান অনেক শক্তিশালী দল। ক্রিকেটে পাঁচ বার অস্ট্রেলিয়া বিশ্বজয় করেছে। ফুটবলে তা সম্ভব না হলেও তাদের শক্তিকে কোনোভাবে খাটো করে দেখার উপায় নেই। বিশ্বকাপে চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেওয়া ছাড়াও এবার এশিয়ান পরাশক্তি দলগুলোকে পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। জর্ডান কখনো বিশ্বকাপ চূড়ান্ত পর্বে সুযোগ না পেলেও এশিয়ান ফুটবলে তাদেরকেও জায়ান্ট বলা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই প্রথম ফুটবল লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। তাও আবার পার্থ স্টেডিয়ামে। ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। তারপরও অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গেলে টাইগাররা এখনো স্নায়ু চাপে ভুগে। একেতো অস্ট্রেলিয়া তারপর আবার তাদের মাঠে খেলা। এই অবস্থায় মামুনুল, এমিলিরা কতটুকু সুবিধা করতে পারবেন?
কিছুদিন আগে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেছিলেন, বাংলাদেশ যে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছে এটাই বড় প্রাপ্তি। হ্যাঁ, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলা মানে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। তাদের বিপক্ষে পয়েন্ট আদায় করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু এমন শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়তে প্রস্তুতিটা প্রয়োজন রয়েছে। বাস্তবে সে ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে বাংলাদেশ মাঠে নামতে পারছে না। কেননা পেশাদার লিগের দ্বিতীয় পর্বে যেভাবে ফিকশ্চার তৈরি হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত লিগের খেলা রয়েছে। ৩ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ। আর লিগ শেষ ১৩ আগস্ট। তাহলে মামুনুলরা কত দিনের প্রস্তুতি নিতে পারবেন? হিসাব করলে দেখা যায় বাংলাদেশ বড় জোর ১৬ দিনের অনুশীলন করতে পারবে। কেননা ৩ সেপ্টেম্বর খেলা বলে বাংলাদেশ নিশ্চয় ৪/৫ দিন আগে পার্থের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবে। কিন্তু এই স্বল্প প্রস্তুতিতে অস্ট্রেলিয়া বা জর্ডানের বিপক্ষে বাংলাদেশ কি করবে।
জয় নয়, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ড্র করতে পারলেই ফুটবল ইতিহাসে এটাই হবে বাংলাদেশের বড় সাফল্য। কিন্তু এ সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব নয়। ম্যাচ হারবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু হারারওতো মাত্রা আছে। বাংলাদেশ যদি অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬-০ গোলেও হারে তা স্বাভাবিক ফল বলেই ধরে নিতে হবে। কিন্তু বস্তা ভরা গোল উপহার দিয়ে অস্ট্রেলিয়া যদি জিতে যায় তাহলে লজ্জায়তো মুখ দেখানো মুশকিল হবে। কিছুটা লড়াই যেন করতে পারে এমন প্রস্তুতির প্রয়োজন কি ছিল না? এ ব্যাপারে বাফুফের বক্তব্য হচ্ছে কোনো সমস্যাতো নেই। খেলোয়াড়রাতো লিগ খেলছে। এরপর যতটুকু প্রস্তুতি হবে তা একেবারে খারাপ নয়। অবশ্য লিগ কমিটির চেয়ারম্যান বাফুফের সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেছেন, আসলে এখানে কিছু করার নেই। লিগ যথাসময়ে শেষ করতে হবে। সামনেতো আরও শিডিউল রয়েছে। আসলে ম্যাচ জেতা সম্ভব নয় বলে অস্ট্রেলিয়া ও জর্ডানে বিপক্ষে প্রস্তুতিটাকে মোটেই গুরুত্ব দেয়নি বাফুফে। কিন্তু এটাতো বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব লড়াই। অন্য দেশগুলো যদি প্রশিক্ষণকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশ কেন পারবে না।