২৯ মার্চ, ২০২৩ ০৭:৪৯

পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা, সিরিজ উইন্ডিজের

অনলাইন ডেস্ক

পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা, সিরিজ উইন্ডিজের

সংগৃহীত ছবি

শক্ত অবস্থানে থেকে কক্ষচ্যুত হয়ে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষের ঝড়ে দলকে দুইশ ছাড়ানো পুঁজি এনে দেন রোমারিও শেফার্ড। রিজা হেনড্রিকস জবাব দেন দারুণ ইনিংস খেলে। কিন্তু অল্পের জন্য পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। আলজারি জোসেফের দারুণ বোলিংয়ে সিরিজ জিতল ক্যারিবিয়ানরা। 

জোহানেসবার্গে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ৭ রানে। ২০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে করে ২২০ রান। ৯ নম্বরে নেমে ২২ বলে ৩ ছক্কা ও ২ চারে অপরাজিত ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন শেফার্ড। নিকোলাস পুরান ১৯ বলে ৪ ছক্কা ও ২ চারে করেন ৪১।

আগের ম্যাচে ২৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জিতে বিশ্ব রেকর্ড গড়া দক্ষিণ আফ্রিকা এবার ৬ উইকেট হারিয়ে যেতে পারে ২১৩ পর্যন্ত। টানা দ্বিতীয় ফিফটিতে ৪৪ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ৮৩ রান করেন হেনড্রিকস।

শেষ ২ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ৩৫ রান। শেষের আগের ওভারে আক্রমণে ফিরেই হেনড্রিকসকে বিদায় করেন জোসেফ। ওই ওভারেই হাইনরিখ ক্লসেন ও ওয়েইন পার্নেলকে ফিরিয়ে প্রথমবার পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান ২৬ বছর বয়সী পেসার। ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়ে জোসেফের প্রাপ্তি ৫ উইকেট। সঙ্গে ৯ বলে অপরাজিত ১৪ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা তিনিই।

ওয়ানডারার্স স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে কাইল মেয়ার্স ও ব্র্যান্ডন কিংয়ের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ৩ ওভারে আসে ৩৮ রান। পরের ওভারে আক্রমণে এসেই কাগিসো রাবাদা পরপর দুই বলে বোল্ড করে দেন মেয়ার্স (১০ বলে ১৭) ও জনসন চার্লসকে। আগের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া চার্লস এবার পান গোল্ডেন ডাক এর তেতো স্বাদ।

হ্যাটট্রিক ডেলিভারি চার মেরে শুরু করেন নিকোলাস পুরান। বাঁহাতি স্পিনার বিয়ন ফোরটানের একই ওভারে তিনি মারেন তিনটি ছক্কা। কিংকে (২৫ বলে ৩৬) বোল্ড করে ৩০ বলে ৫৫ রানের জুটি ভাঙেন লুঙ্গি এনগিডি। পরের দুই ওভারে বিদায় নেন রভম্যান পাওয়েল ও পুরান। নবম ওভারে ২ উইকেটে ৯৪ থেকে দ্রুতই তাদের স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ১১০।

জেসন হোল্ডার ও রোস্টন চেইস প্রত্যাশার দাবি মেটাতে পারেননি। রেমন রিফার ২ ছক্কা ও একটি চারে ১৮ বলে করেন ২৭। ষোড়শ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ছিল ৮ উইকেটে ১৬১। সেখান থেকে দুইশ ছাড়ানোর কৃতিত্ব শেফার্ডের। শেষ ২ ওভারে আসে ৪৩ রান। এর মধ্যে রাবাদার করা শেষ ওভারে তিনটি ছক্কা ও একটি চারে ২৬ রান তোলেন শেফার্ড। জোসেফের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন নবম উইকেট জুটিতে ৫৯ রান আসে স্রেফ ২৬ বলে। যেখানে জোসেফের অবদান কেবল ১৪।

পরে আঁটসাঁট বোলিংয়ে শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ২ ওভারে আসে কেবল ৭। এরপর রানের গতিতে দম দেন কুইন্টন ডি কক ও হেনড্রিকস। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ডি কককে (২১) ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম সাফল্য এনে দেন জোসেফ। এরপর উইকেটে গিয়েই তার টানা তিন বলে ২টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান রাইলি রুশো। হেনড্রিকসের সঙ্গে তার জুটিতে পঞ্চাশ রান পূরণ হয় স্রেফ ২০ বলে। 

১০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছিল ১ উইকেটে ১০৩। এরপরই ৩৯ বলে ৮০ রানের জুটি ভাঙে রুশোর বিদায়ে (২১ বলে ৪২)। ২৬ বলে ফিফটির পর হেনড্রিকস জীবন পান কিং ক্যাচ ফেলায়। প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি ডেভিড মিলার। শেষ ৫ ওভারে তাদের দরকার ছিল ৬৫ রান। হেনড্রিকস আশা বাঁচিয়ে রাখলেও তার বিদায়ের পর আর পেরে ওঠেনি স্বাগতিকরা। শেষ ওভারে ২৬ রানের সমীকরণে তারা নিতে পারে ১৮।  

এই সফরে টেস্ট সিরিজ হারের পর ওয়ানডে সিরিজ ১-১ ড্র করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সফরকারীরা এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিল ২-১ ব্যবধানে।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ২২০/৮ (মেয়ার্স ১৭, কিং ৩৬, চার্লস ০, পুরান ৪১, পাওয়েল ১১, রিফার ২৭, হোল্ডার ১৩, চেইস ৬, শেফার্ড ৪৪*, জোসেফ ১৪**; ফোরটান ২-০-২২-০, পার্নেল ৪-০-৪৩-০, এনগিডি ৪-০-৪৫-১, রাবাদা ৪-০-১৫০-২, নরকিয়া ৪-০-৩৬-২, মারক্রাম ২-০-২১-১)

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ২১৩/৬ (ডি কক ২১, হেনড্রিকস ৮৩, রুশো ৪২, মিলার ১১, মারক্রাম ৩৫*, ক্লসেন ৬, পার্নেল ২, ফোরটান ০*; কটরেল ৩-০-২৪-০, চেইস ৪-০-৪৩-০, জোসেফ ৪-০-৪০-৫, হোল্ডার ৪-০-৪২-১, শেফার্ড ৪-০-৪৪-০, রিফার ১-০-১৮-১)

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ রানে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ২-১-এ জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ম্যান অব দা ম্যাচ: আলজারি জোসেফ

ম্যান অব দা সিরিজ: জনসন চার্লস


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর