দেড়শ কিলোমিটার গতিতে নিয়মিত বল করে গেলে উইকেট তো ধরা দিতেই হবে। আন্দ্রে অ্যাডামস জানতেন, ইনিংসে পাঁচ উইকেটের স্বাদ অবশ্যই পাবেন নাহিদ রানা। সেই দিনটি বেশ দ্রুতই চলে আসায় দারুণ খুশি বাংলাদেশের বোলিং কোচ।
অভিষেকের পর থেকেই দারুণ বোলিং করছেন। দিন যত যাচ্ছে, গতি আর ধার—দুটিই বাড়ছে নাহিদ রানার। সোমবার (২ ডিসেম্বর) কিংস্টন টেস্টে গতি দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রীতিমতো নাকানিচুবানি খাইয়েছেন। তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেট। তার আগুন ঝরানো বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসেই ১৮ রানের লিড পায় মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪১.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৩ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের লিড ২১১ রানের। এর বড় কৃতিত্ব ফাস্ট বোলার নাহিদ রানার। তার পেস তোপেই জ্যামাইকা টেস্টে চালকের আসনে বাংলাদেশ। আর তাইতো নাহিদের প্রশংসা ঝরে পড়েছে কোচের কণ্ঠে।
নাহিদ রানা প্রসঙ্গে বোলিং কোচ বলেন, ‘আমরা জানতাম কোনো না কোনো পর্যায়ে এমনটা হবে। আপনি যখন ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করবেন, আপনি আসলে উইকেট পাবেনই। আমাদের ওকে দেখেশুনে রাখতে হবে। এ কারণেই ও প্রথম ম্যাচে খেলেনি। ভাগ্য ভালো যে ওর আশপাশে তাসকিন ও হাসানের মতো পেসার আছে, যারা মাঠে ওর মনোযোগ ঠিক রাখে।’
অভিষেক টেস্টে লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে দুটি ও দ্বিতীয় ইনিংসে তিনটি উইকেট নেন নাহিদ। তবে বেশ খরুচে ছিলেন তিনি। ওভারপ্রতি রান দেন দুই ইনিংসেই ছয়ের বেশি। পরের টেস্ট খেলেন পাকিস্তানে। এবার দুই ইনিংসে উইকেট ছিল একটি, রান খরচ করেন ওভারপ্রতি পাঁচ ও সাড়ে পাঁচ করে। তবে পাকিস্তান সফরে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে তার উন্নতির ছাপ রাখার শুরু। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম ইনিংসে একটি উইকেট নেন বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে তিনি ম্যাচের মোড়ই বদলে দেন দ্রুত।
পরের ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে একটি করে টেস্ট খেলেন। ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেটের স্বাদ পেলেন জ্যামাইকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ৬১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে সোমবার তিনি লিড এনে দেন বাংলাদেশকে।
বোলিং কোচ বলেন, গত এক বছরে যেটা হয়েছে, সে আগের চেয়ে অনেক ‘অ্যাকুরেট’ হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে যখন শুরু করেছিল, তখন অনেক এলোমেলো ছিল। নিশানার জায়গায় অনেক উন্নতি করেছে সে।
অ্যাডামস জানালেন, অতি-কোচিং বা অনেক পরামর্শ দিয়ে প্রতিভাবান এই তরুণের সহজাত সামর্থ্যকে নষ্ট করে চান না তারা।
তিনি বলেন,নাহিদ রানা দারুণ গতিময়। আমরা স্রেফ তাকে কিছু পরামর্শ দেই এবং বাকিটা তার সহজাত প্রবৃত্তির ওপর ছেড়ে দেই। সব মিলিয়ে ২২ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলারকে যে বাড়তি যত্ন নিতে হবে, তা জানেন অ্যাডামস।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম