বিশাল এক এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। নাসার কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে জার্মানির দুই দল গবেষক সম্প্রতি খুঁজে পেয়েছেন এই গ্রহ। নতুন পাওয়া এই এক্সোপ্ল্যানেটের নাম দেওয়া হয়েছে কেপলার-৪৩২বি। আর বেশ কয়েকটি কারণে অতীতে খুঁজে পাওয়া এক্সোপ্ল্যানেটগুলোর (যে গ্রহগুলো সূর্যের কক্ষপথে ঘুরে না) চেয়ে এটি আলাদা।
নাসার কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এটিকে পর্যবেক্ষণ করে এবং নিশ্চিত হয় যে এটি আসলেই একটি গ্রহ, অন্য কোনো ধরণের জ্যোতিষ্ক নয়। আন্দালুসিয়া, স্পেন এর কালার আলতো অবজারভেটরির টেলিস্কোপ এবং ক্যানারি আইল্যান্ডের নরডিক অপটিক্যাল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জানা যায়, কেপলার-৪৩২বি বেশ ঘন পদার্থে তৈরি। এটি মোটামুটি বৃহস্পতির মতো আকারের হলেও এর ভর বৃহস্পতির প্রায় ছয় গুণ। এটি যে তারা প্রদক্ষিণ করছে তাও বেশ অদ্ভুত। তারাটি রেড জায়ান্ট ধরণের এবং এর কক্ষপথ সূর্যের চেয়েও মোটামুটি চারগুণ বেশি।
এই গ্রহের আবিষ্কারের সাথে সম্পৃক্ত ডক্টর ডেভিড গ্যান্ডলফি জানান, বেশিরভাগ এক্সোপ্ল্যানেটই অনেক বড় এবং বৃত্তাকার কক্ষপথে বৃহৎ আকৃতির তারাকে কেন্দ্র করে ঘোরে। কিন্তু কেপলার-৪৩২বি এর কক্ষপথ সে তুলনায় অনেক ছোট এবং লম্বাটে আকৃতির। এমন আকৃতির কক্ষপথ থাকায় এর ঋতুগুলো ভীষণ চরমভাবাপন্ন। শীতে এর তাপমাত্রা থাকে ৯৩২ ডিগ্রী ফারেনহাইট, আবার গ্রীষ্মে থাকে এক হাজার ৮৩২ ডিগ্রী ফারেনহাইট। এই গ্রহের এক বছর হলো মোটামুটি পৃথিবীর ৫২ দিনের সমান।
উল্লেখ্য, এত কাছ থেকে একটি রেড জায়ান্ট তারকাকে প্রদক্ষিণ করা এমন গ্রহ পাওয়া গেছে মাত্র পাঁচটি। রেড জায়ান্ট তারকাগুলো হলো মোটামুটি জীবনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এমন তারকা। তারা নিজেদের আকৃতির ১০ থেকে ১০০ গুণ ফুলে যেতে পারে। আর এ সময়ে তাদের কাছাকাছি থাকা যে কোনো গ্রহকে তারা খেয়ে ফেলতে পারে। এদিকে কেপলার-৪৩২বি এতদিন পর্যন্ত টিকে থাকলেও এর আয়ু সম্ভবত আর বেশিদিন নেই। ক্রমাগত ফুলতে থাকা এই রেড জায়ান্টের কবলে পড়ে মোটামুটি ২০০ মিলিয়ন বছরের মধ্যেই বিলীন হয়ে যাবে এই এক্সোপ্ল্যানেট। হাফিংটন পোস্ট।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫/ রোকেয়া।