পাঁচ বছরের যাত্রা শেষ। বৃহস্পতির বাঁধনে ধরা দিল নাসার মহাকাশযান জুনো। ইতিমধ্যেই দৈত্যগ্রহকে ঘিরে পাক খেতে শুরু করেছে জুনো। জুনোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য পৃথিবীতে প্রাণের রহস্য সন্ধানে কাজে আসবে বলে আশা করছে নাসা।
সূর্যের সংসারে সবচেয়ে বড় গ্রহ হল বৃহস্পতি। বিজ্ঞানীরা বলেন, পৃথিবীতে প্রাণের স্পন্দন সৃষ্টিতে দৈত্যাকৃতি এই নিষ্প্রাণ গ্রহটির অবদান অপরিসীম। কারণ বিপুল মাধ্যাকর্ষণে ধুমকেতু-গ্রহাণুদের বুকে টেনে নিয়ে মহাজাগতিক সংঘর্ষের হাত থেকে বারবার আমাদের এই নীল গ্রহকে বাঁচিয়ে দিয়েছে সে। এই বৃহস্পতির রহস্য সন্ধানে পৌঁছে গেল নাসার মহাকাশযান জুনো।
পাঁচ বছর আগে ফ্লোরিডা থেকে জুনোর যাত্রা শুরু হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে বৃহস্পতিকে ঘিরে পাক খাওয়া শুরু করেছে জুনো। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, জুনোর গতি কমিয়ে আস্তে আস্তে তাকে বৃহস্পতির মাধ্যাকর্ষণ বলয়ের আওতায় নিয়ে যাওয়া ছিল অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ সামান্য ভুলত্রুটি হলে দৈত্যগ্রহের বাঁধনে ধরা না পড়ে জুনো হারিয়ে যেত আরও দূর মহাশূন্যে। অপচয় হত ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।
ডিম্বাকার কক্ষপথে বৃহস্পতিকে ঘিরে একবার পাক খেতে পৃথিবীর হিসাব অনুযায়ী জুনোর১৪ দিন সময় লাগবে। দৈত্যগ্রহের চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে তার ঘন মেঘের মধ্য দিয়ে উঁকি দেবে জুনোর যান্ত্রিক চোখ। বৃহস্পতির বিপুল চৌম্বক ক্ষেত্র, মাটির গঠন, পানির চিহ্ন আছে কি নেই - এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে সে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টির রহস্য সন্ধানে কাজে আসবে এই সমস্ত তথ্য।
২৭ অগাস্ট জুনোর কাছ থেকে প্রথম ছবি পাওয়া যাবে বলে আশা করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। প্রায় দুই বছর বৃহস্পতিকে ঘিরে পাক খাবে সে। তারপর দৈত্যের বুকে আছড়ে পড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে জুনো। মাঝের এই কটা দিন বৃহস্পতির তেজস্ক্রিয় বলয়ের কামড় থেকে তাকে আগলে রাখাই এখন বিজ্ঞানীদের কাছে চ্যালেঞ্জ। জুনোর আগে একমাত্র মহাকাশযান গ্যালিলেও বৃহস্পতির কক্ষপথে পৌঁছেছিল। ২০০৩ গ্যালিলেও ধ্বংস হওয়ার পর জুনোই প্রথম পৃথিবীর বার্তা নিয়ে উঁকি দিল দৈত্যগ্রহের সংসারে।
বিডি প্রতিদিন/৫ জুলাই ২০১৬/হিমেল-০৪