নাসার সাফল্যের কাহিনী উঠে এল গুগলের ডুডলে। তাও আবার সুন্দর একটি অ্যানিমেশন আকারে। এতে দেখা যায়, ছোট্ট এই কাহিনীতে দূরবীনে চোখ রেখেছে স্বয়ং পৃথিবী। সঙ্গে একটু উকিঝুঁকি মারছে চাঁদও। হঠাৎ হাসিমুখে সামনে চলে এসেছে পৃথিবীর মতোই একটি গ্রহ।
ঠিক এমনটাই যেন হয়েছে নাসার ক্ষেত্রে। আস্ত সৌরজগতের সন্ধান পেয়েছেন মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা। সেই জগতের সাতটি গ্রহ এক্কেবারে পৃথিবীর মতো। তাও আবার বসবাসযোগ্য।
নাসার পক্ষ থেকে একটি টুইটবার্তায় এই নতুন রেকর্ডের কথা বলা হয়েছে। নাসার সদর দফতর ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা বলেন, ট্র্যাপিস্ট-১ নামে একটি অতি শীতল বামন নক্ষত্র ঘিরে সাতটি গ্রহ প্রদক্ষিণ করছে। গ্রহগুলোর পৃষ্ঠে মহাসাগরের অস্তিত্বও থাকতে পারে। বিশেষ করে ট্র্যাপিস্ট-১ নক্ষত্রটি পৃথিবীর তুলনায় শীতল। এটিও বসবাসযোগ্য। প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরে এই সৌরজগতের হদিশ মিলেছে। এই প্রথমবার এমন সৌরজগতের সন্ধান মিলল, যেখানে অনেকগুলো গ্রহ একটি বড় নক্ষত্রকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে। এর মধ্যে তিনটি গ্রহতেই প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনায় জোর দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
সাম্প্রতিক সময়ের এই আবিষ্কারের কথা ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এই গবেষণার অন্যতম বিজ্ঞানী মাইকেল গিলন বলেন, এই সাতটি গ্রহে খুব সম্ভবত পানির অস্তিত্ব রয়েছে। ফলে গ্রহপৃষ্ঠে প্রাণের সন্ধানও মিলতে পারে।
মাইকেল জানান, ট্র্যাপিস্ট-১ নামে বামন নক্ষত্রটিই এই গ্রহের সূর্য। এটি অতি শীতল। সূর্যের প্রায় এক দশমাংশ আকারের নক্ষত্রটি সূর্যের তুলনায় এক সহস্রাংশ কম উজ্জ্বল। ফলে গ্রহগুলো ট্র্যাপিস্টের কাছাকাছিই রয়েছে। গ্রহগুলো বসবাসযোগ্য। বৃহস্পতি গ্রহ থেকে চাঁদের যা দূরত্ব, গ্রহগুলো ট্র্যাপিস্টের থেকে ঠিক ততটাই দূরে রয়েছে। তবে গ্রহগুলোর আকার পৃথিবীর মতোই।
বিজ্ঞানী আমাউরি ট্রাইয়ড বলেন, খুব বিশদে এ গ্রহগুলোর পরিবেশ নিয়ে গবেষণা করা যাবে। ২০১৮ সালেই নাসা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ আনছে। সেটির মাধ্যমেই গ্রহগুলোর বায়ুমন্ডলের মধ্যে কী কী রয়েছে তা জানা যাবে। যদি বায়ুমন্ডলের মধ্যে ওজন, অক্সিজেন বা মিথেনের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়, তাহলে প্রাণের সন্ধান থাকার সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে এই মূহূর্তে যে টেলিস্কোপ রয়েছে, তাতে দেখা গেছে গ্রহগুলো পরস্পরের বেশ কাছাকাছি অবস্থিত।
বিডি প্রতিদিন/২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/এনায়েত করিম