গাজীপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সেই টাম্পাকো কারখানা স্বপ্ন বুননের নবযাত্রায় ফিরছে। দীর্ঘ এক বছর পর গত ৯ আগস্ট নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে টাম্পাকোর শ্রমিকদের মধ্যে শুরু হলো নতুন আশার উদ্দীপনা। ভবন নির্মাণের আনুষ্ঠানিকতায় এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিলেন চাকরির নিশ্চয়তা পত্র। নিহতদের পরিবার ও অন্য শ্রমিকরা ফিরে পাবেন চাকরির সুযোগ। কারখানায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে ১০ হাজার লোকের। কারখানা থেকে বছরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব খাতে জমা হবে। কারখানাটি ফের চালু হলে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে টঙ্গীর বিসিক শিল্প নগরীতে।
১৯৭৮ সালে টঙ্গীর বিসিক এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয় টাম্পাকো ফয়লস কারখানা। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই একটি আদর্শিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে সারা দেশে সুনামের সঙ্গেই এগিয়ে চলে প্রতিষ্ঠানটি। পণ্যের গুণগত মান এবং শ্রমিকদের জন্য কাজের মানসম্মত পরিবেশের কারণে ‘টাম্পাকো ফয়লস লিমিটেড’ দেশের একটি স্বনামধন্য প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি হিসেবে পরিচিতি পায়। এ প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহণ করত নামিদামি অনেক বহুজাতিক কোম্পানি। ফলে কারখানাটি হয়ে ওঠে ৫০০ পরিবারের জীবন ও জীবিকার অবলম্বন।
এবিষয়ে টাম্পাকো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাফিউস সামি আলমগীর জানান, গ্রিন ফ্যাক্টরি মডেল অনুসারে একটি আদর্শ এবং পরিবেশবান্ধব কারখানা নির্মাণ করা হবে। প্রস্তাবিত এ কারখানার বার্ষিক উত্পাদন ক্ষমতা হবে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। আর বাংলাদেশে প্যাকেজিং খাতে এই কারখানাটিই হবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত এবং সর্বোচ্চ পণ্য উত্পাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কারখানা। টাম্পাকো গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনার পর আমরা এখনো শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিয়ে যাচ্ছি। অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটার ১৫ দিনের মধ্যে লেবার কোর্টের মাধ্যমে নিহত শ্রমিকদের পরিবারে ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি চালু হলে আবার নিহতদের পরিবারের সদস্য ও আহতরা সবাই কাজ করতে পারবেন। স্থানীয় এমপি জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনায় টাম্পাকো ফয়লস কারখানায় নিহত শ্রমিকদের পরিবারে সরকারের পক্ষ থেকে তিন লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। টাম্পাকো ফয়লস কারখানাটি আবার চালু হতে যাচ্ছে শুনে আমি আনন্দিত। এত ক্ষয়ক্ষতির পরও তারা আবার কারখানাটি চালু করছে, এটি একটি শুভ উদ্যোগ।