বরিশাল নগরের ঐতিহ্য বেলস পার্ক। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পার্কে প্রচুর লোক সমাগম হয়। এ সুযোগে পার্কটি ভ্রাম্যমাণ খাবার বিক্রেতাদের দখলে চলে গেছে। সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়ে বসা খাবারের দোকান এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের আড্ডায় পার্কের স্বাভাবিক পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসনামলের শেষ দিকে তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মি. বেল প্রায় পৌনে ৯ একর সরকারি খাস জমির ওপর এ পার্ক বা উদ্যানটি গড়ে তুলেছিলেন। তখন তার নাম অনুসারেই উদ্যানটির নামকরণ হয়েছিল ‘বেলস পার্ক’। এ উদ্যানটির চারপাশে ওয়াকওয়ে, বসার জন্য বেঞ্চ, ছাতাসহ শৌচাগার ও বিশ্রামাগার নির্মাণ ছাড়াও উদ্যানজুড়ে দৃষ্টিনন্দন লাইটিং রয়েছে। পাশাপাশি শোভাবর্ধনের জন্য পুরো মাঠ ঘিরে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছিল। সেই থেকে উদ্যানটির পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণ করে সিটি করপোরেশন। প্রতিদিনই এ উদ্যানে সকাল-বিকাল প্রচুর লোক হাঁটতে ও সান্ধ্যকালীন বিনোদনে আসেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়ে ১৭৮ জন ভ্রাম্যমাণ দোকানি খাবার বিক্রি করেন। এসব দোকানের জন্য পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে ছোট দোকানের জন্য ৩০ টাকা ও বড় দোকানের জন্য ৫০ টাকা করে প্রতিদিন আদায় করা হয়। কিন্তু বাস্তবে দোকান রয়েছে ২৫০টির মতো।
এখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের দাবি, এ উদ্যানের সৌন্দর্য রক্ষায় সর্বোচ্চ ২০-২৫টি দোকান থাকতে পারে। মানবিকতার দোহাই দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে। এসব দোকানপাটকে ঘিরে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। পার্কটি সন্ধ্যার পর মাদকাসক্ত কিশোরদের দখলে চলে যায়। বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ওদের ভিড় ও আড্ডা হয়। ছোটখাটো মারামারি প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে। দোকানের নানা বর্জ্য মাঠের অভ্যন্তরসহ পাশের ডিসি লেকে ফেলায় লেকটির পানিও দূষিত হচ্ছে।