দেহের ওজন বাড়ে কেন?
দৈহিক ওজন বৃদ্ধির মূল কারণ- শক্তি ও তার ব্যবহারে অসংগতি। আমাদের গৃহীত খাবারে শক্তি ক্যালোরি হিসেবে থাকে। আমরা আমাদের পছন্দ সামর্থ্য ও অভ্যাস অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করে থাকি। মানুষের বয়স, লিঙ্গ, ওজন আর দৈনন্দিন কাজের ওপর হার শরীরের ক্যালোরির চাহিদা নির্ভর করে। প্রকৃতপক্ষে কেউ যদি তার প্রাত্যহিক চাহিদার চেয়ে বেশি ক্যালোরি প্রতিদিন বা প্রায়ই খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করে। তবে তার বাড়তি অংশ শরীরে মেদ হিসেবে জমতে থাকবে।
ওজনাধিক্য নিরূপণের মাপকাঠি
দৈহিক স্থূলতা নিরূপণের জন্য বেশ পদ্ধতি প্রচলিত আছে। এর মধ্যে বিএমআই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। ইদানীং কোমর নিতম্বর ওজনের অনুপাত ও ক্রমশ অপ্রিয় হয়ে উঠছে।
দৈহিক ওজন কমায় স্বাস্থ্যঝুঁকি
দৈহিক ওজন কমিয়ে আমরা অনেক রোগের ঝুঁকি থেকে মুক্তি পেতে পারি। মাত্র ৫% থেকে ১০% ওজন কমিয়ে অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
* ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সম্ভাবনা কমে।
* উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকিও কমবে।
* রক্তে ক্ষতিকর কলেস্টেরল কমতে সাহায্য করবে এবং উপকারী কলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করবে।
* আর্থ্রাইটিসে পড়ার সম্ভাবনা কমবে।
* শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি ঘটায়।
* রাতে ভালো ঘুমের সম্ভাবনা বাড়ায়।
ওজন কমাবেন কীভাবে?
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা উচিত। পাশাপাশি কায়িক শ্রম আর খাবারে নিয়ন্ত্রণ জরুরি। এক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। তিনি আপনার শারীরিক ঝুঁকি বিবেচনা করে একটি পন্থা বলে দেবেন। তবে ওজন হ্রাসে কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হলো-
* ওজন কমাতে তাড়াহুড়ো নয়। কেননা, ওজন কমাতে গিয়ে কিছুদিন পর আবার ওজন বৃদ্ধি পেলে তা ক্ষতির কারণ হবে।
* নিয়মিত খাদ্য তালিকায় কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার রাখুন। যেমন- শাক-সবজি, টক ফল ইত্যাদি। যারা ইতিমধ্যেই স্থূলকায় আছেন তারা শাক-সবজি, মাছ ইত্যাদি জাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করুন।
* মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
প্রতিদিনের দৈহিক শ্রম
* প্রতিদিন ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করুন। টানা সম্ভব না হলে ২ বা ৩ বারে তা করুন।
* এমন কিছু দিয়ে শুরু করুন যা আপনার জীবনধারায় মানিয়ে যাবে। হাঁটা সবচেয়ে ভালো। বিকল্প হিসেবে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, ব্যাডমিন্টন বা টেনিস খেলাধুলা করতে পারেন।
* নিজের কাজ নিজে করুন।
* বাগান করা/গাড়ি বা ঘর পরিষ্কার করা, কাপড় ধোয়া বা অন্যান্য গৃহস্থালি কাজের অভ্যাস করুন।
* অফিসে যাওয়ার সময় হাঁটার অভ্যাস করুন এবং অফিস বা বাসার লিফট ব্যবহার না করে হেঁটে ওঠার চেষ্টা করুন।