বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

পারফিউমের প্রভাব

পারফিউমের প্রভাব

ইংরেজিতে পারফিউম, ফরাসিতে পাফাম, বাংলায় পরিচিত সুগন্ধি নামে। পারফিউমের কাক্সিক্ষত ঘ্রাণ যে কীভাবে মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে তা বলাই বাহুল্য। আর তাই হয়তো জার্মান লেখক প্যাট্রিক সাসকাইন্ড ১৯৮৫ সালে রচনা করেন পারফিউম নামের একটি বই। যা ৪৫টি ভাষায় মুদ্রিত হয়েছিল। আর সেই বইকে বড় পর্দায় নিয়ে আসেন আরেক জার্মান পরিচালক টম টাইকার। সিনেমাটি বেশ প্রশংসিতও হয়।

পারফিউম ব্যক্তিত্বের বহির্প্রকাশেও ঘ্রাণ বড় ভূমিকা রাখে। কোন পারফিউম বা সেন্ট ব্যবহার করছেন তা অন্যদের কাছে প্রথমেই আপনার অলিখিত পরিচয় করিয়ে দেয়। অনেক সময়ই ভালো এ্যারোমার জন্য ধরেই নেওয়া হবে আপনি মানুষ হিসেবে স্মার্ট। পরিচিতি না থাকলেও আপনার ওপর ইতিবাচক মনোভাব রাখে আশপাশের মানুষ। অর্থাৎ এর মনস্তাত্ত্বিক ভূমিকা বিস্তর। ভালো মানের পারফিউম কেবল সুগন্ধই ছড়ায় না, প্রাত্যহিক জীবনে মেজাজ ভালো রাখে। বাড়ায় আত্মবিশ্বাস, ব্যক্তিকে করে আকর্ষণীয় এবং আবেদনময়ী। বিজ্ঞানের ভাষায়, পারফিউম মানবদেহে অ্যাফ্রোডিসিয়াক হিসেবে কাজ করে (যৌন ইচ্ছা জাগিয়ে তোলে)। এমনকি মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, অনিদ্রা এবং মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে। সুঘ্রাণ মেজাজ, একাগ্রতা, স্মৃতি এবং আবেগকে প্রভাবিত করে। বলা হয়, মনোরম গন্ধের সংস্পর্শে আসার পর মেজাজের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত উন্নতি হয়।

নাইকির গবেষণায় দেখা যায়, শতকরা ৮৪ ভাগ ক্ষেত্রে জুতার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় ঘ্রাণের কারণে। এমনকি সুবাসিত পরিবেশ থাকলে গ্রাহক শতকরা ১০ থেকে ২০ ভাগ মূল্য বেশি পরিশোধেও আপত্তি করে না।

জাপানি একটি কোম্পানি তাদের গবেষণায় দেখিয়েছে, ল্যাভেন্ডার ও জেসমিনের সুবাস ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের স্ট্রেসকে প্রশমিত করে। আর লেবুর সুবাস তাদের কর্মীদের ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। কর্মচারীদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং সন্তুষ্টি অর্জন করতেও ভূমিকা রাখে বিভিন্ন ঘ্রাণ। কর্মপরিবেশকে উন্নত আর আবেগ ও প্রতিক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এমআরআই-এর সময় ক্লাস্ট্রোফোবিয়া (সীমাবদ্ধ স্থানের ভয়) কমাতে পারে ভ্যানিলার ঘ্রাণ। অর্থাৎ সুগন্ধির ব্যবহার বেশ চাপের পরিস্থিতিতেও মানুষের উদ্বেগ কমায়।

তাই বলাই যায়, ব্যক্তিজীবনকে সতেজ বোধ করার পেছনে সুগন্ধির ভূমিকা অনেক। বাইরে বের হওয়ার ২০ মিনিট আগে সুগন্ধি ব্যবহার করা উচিত। মেকআপ নেওয়ার পর কানের পেছনে, হাতের কবজিতে সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। যেসব জায়গায় রক্তের সঞ্চালন বেশি বা শরীরের যেসব জায়গা তুলনামূলক উষ্ণ, সেসব জায়গায় সুগন্ধি স্প্রে বা ব্যবহার করলে সারাদিন ধরে নিজেকে সুরভিত রাখা যায়।

তথ্যসূত্র : স্টাইলক্রেজ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর