পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষণে চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডারখ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিল পানিতে ডুবে গেছে। এতে রোপন করা আমনের ৩ হাজার ৪৩৫ হেক্টর চারা পানিতে ডুবে রয়েছে। টানা বর্ষণে সব ফসল পঁচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন সাড়ে তিন হাজার কৃষক। পানিতে পুরো গুমাইবিল যেন সমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, বৃষ্টি হলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে। এভাবে কখনই পানি বাড়েনি। যদি এভাবে পানি জমে থাকে তাহলে আমাদের লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, কাপ্তাই সড়কের গুমাইবিলের মরিয়মনগর ও চন্দ্রঘোনা-কদমতলি ইউনিয়নের বিশাল এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। বিশালাকৃতির ডোবার রূপ নিয়েছে এই শস্যভাণ্ডার। অন্তত ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত পানি জমে রয়েছে বিলে। বিলের পাড়ে কৃষকদের উদ্বিগ্ন হয়ে রোপণ করা চারাগুলো পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের গুমাই বিল ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, গুমাইবিলের সাড়ে তিন হাজার হেক্টরের মধ্যে ৩ হাজার ৪৩৫ হেক্টর রোপণ হয়। চলতি মৌসুমে টানা বৃষ্টিতে গুমাইবিল সহ কিছু বিল পানির নিচে রয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পানি নেমে গেলে আমন চাষে তেমন ক্ষতি হবে না। এবার ৭০ শতাংশ ব্রিধান ৫১ রোপণ করা হয়। যা বন্যার পানিতে ১৪ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, জোয়ারের পানি আসলে পানি বেড়ে যায় আর ভাটা পড়লে পানি কমে যায়। যদি ৭ দিন পর্যন্ত পানিতে ধানের চারা ডুবন্ত অবস্থায় থাকে তাহলে ব্রিধান ৫১ ও ৫২ ছাড়া অন্যান্য জাতের কিছু ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমরা কৃষকদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছি যাতে বৃষ্টি থেমে গেলে দ্রুত রিকভার করতে পারেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, গুমাইবিলের পানি যাতে নেমে যায়, পানি যাতে দ্রুত নিষ্কাশন হয় নজর রাখা হচ্ছে। গত তিনদিনের টানা বর্ষণে রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিল সহ একাধিক বিল পানির নিচে রয়েছে। এবার বেশির ভাগ কৃষক বন্যা সহনশীল জাতের আমন চারা লাগিয়েছেন। টানা কয়েকদিন পানি থাকলেও এসব চারা নষ্ট হবে না।
গুমাইবিলের পানি ব্যবস্থাপনা অ্যাসোসিয়েশনের ইছামতি ইউনিটের সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, টানা বৃষ্টিতে গুমাইবিল ডুবে গেছে। বিলের আশপাশে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কারণে পানি নিষ্কাশনের বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত