দেশের দক্ষিণ উপকূলের কৃষি আর মৎস্য সম্পদের জেলা বরগুনার ১২ লাখ মানুষ এখনো যোগাযোগব্যবস্থায় পিছিয়ে আছে। জেলায় ছয়টি উপজেলা। এর চারটি উপজেলার ৮ লাখ মানুষকে সড়কপথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় দুই নদী বুড়ীশ্বর আর বিষখালীর কারণে। এলাকাবাসীর অন্যতম দাবি- সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন। এজন্য স্থানীয় নাগরিকরা সামাজিক আন্দোলন করছেন। তারা ২৮ বছর ধরে বুড়ীশ্বর (পায়রা) আর বিষখালী নদীতে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। এ পর্যন্ত এ দাবি আদায়ে সফল হতে পারেনি বরগুনাবাসী। স্থানীয় সামাজিক আন্দোলনের নেতাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতাদের আন্তরিকতার অভাবে জনগণের দুর্ভোগ কাটছে না। সম্প্রতি বরগুনার বিভিন্ন পেশার নাগরিকরা তাদের দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে নাগরিক ঐক্য ফোরাম গঠনের লক্ষ্যে সভাও করেছেন। স্থানীয় প্রশাসনও তাদের দাবি আদায়ে সব কর্মসূচিতে সহযোগিতা করবে এমনটা আশা নাগরিক নেতৃবৃন্দের।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম ২০২৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক সম্মেলনে ব্রিজ দুটির প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব তুলে ধরেন। এরপর সেতু বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর চিঠি দিয়েছেন বরগুনা জেলা প্রশাসক। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, ২০১৭ সালে বুড়ীশ্বর এবং বিষখালী নদীর ওপর পৃথক দুটি ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা সম্পন্ন হয়েছে। তবে এরপর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরগুনা নাগরিক আন্দোলনের সদস্যসচিব মনির কামাল বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার পরও বরগুনাবাসী এর অর্থনৈতিক সুফল পাচ্ছে না বুড়ীশ্বর আর বিষখালী নদীতে ব্রিজ না থাকায়। আমাদের উৎপাদিত কৃষি ও মৎস্য সম্পদ জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারছে না। ব্রিজ দুটি হলে রাজধানীসহ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সহজে পণ্য সরবরাহ করা যাবে।
বরগুনার বিশিষ্ট সমাজসেবক মুক্তিযোদ্ধা সুখরঞ্জন শীল বলেন, বরগুনার উন্নয়নে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করেছি। আমাদের যা কিছু অর্জন হয়েছে সবটাই নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফল। স্বাভাবিকভাবে আমরা কোনো উন্নয়নের অংশ পাইনি। আমাদের এখন প্রধান দাবি হচ্ছে, যে বৃহৎ দুটি নদীর কারণে জেলা সদরের সঙ্গে চারটি উপজেলার সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা থেকে অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে পিছিয়ে রয়েছি, বিষখালী আর বুড়ীশ্বর নদীতে ব্রিজ নির্মাণসহ সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন।