বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আসছে নতুন মেগা প্রকল্প

পদ্মাপাড়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর । ঢাকায় হচ্ছে তিনটি সার্কুলার রোড । পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু । এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল ও রংপুর মহাসড়ক চার লেন । জেলায় জেলায় আইটি পার্ক । দুটি এলএনজি টার্মিনাল

গোলাম রাব্বানী

চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি আরও নতুন মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। পদ্মাপাড়ে অত্যাধুনিক বিমানবন্দর নির্মাণ, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, দুটি এলএনজি টার্মিনাল, ঢাকা মেট্রো সার্কুলার রোড ও এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেন করাসহ প্রায় এক ডজন নতুন মেগা প্রকল্প রয়েছে এই তালিকায়। পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে পরিকল্পনা কমিশন। এর মধ্যে কয়েকটি প্রকল্প দ্রুত একনেকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। এ ছাড়া আইটি খাতের সক্ষমতা বাড়াতে জেলায় জেলায় আইটি পার্ক করা হচ্ছে। পরিবহন সেক্টরের জন্য গ্রহণ করা হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ২০ বছর মেয়াদি একটি পরিবহন পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), আউটার রিং রোড, ছয়টি এক্সপ্রেসওয়ে, ২১টি টার্মিনাল ও ঢাকার চারপাশে সার্কুলার ওয়াটারওয়ে করার পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছর ২৫০টি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দেয়। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৫৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অনুমোদন দেওয়া হয় ২৮০টি প্রকল্প। এদিকে সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়ন, কৃষি থেকে শিল্প অর্থনীতিতে উত্তরণ, নিম্নমধ্য আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তর এবং অর্থনীতিকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। এজন্য সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে কাজও শুরু হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে (২০১৬-২০) এই পরিকল্পনার অধীনে কর্মসংস্থানের টার্গেট রাখা হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ মানুষের। একইভাবে ২০১৬-তে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ শতাংশ। ২০১৭ অর্থবছরে ৭.২ শতাংশ, ২০১৮ অর্থবছরে ৭.৪ শতাংশ, ২০১৯ অর্থবছরে ৭.৬ শতাংশ এবং পরিকল্পনার শেষ বছর ২০২০ অর্থবছরে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের টার্গেট রয়েছে। নতুন মেগা প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একান্ত সাক্ষাত্কারে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেছেন, ‘মেগা প্রকল্পের মধ্যে আমাদের হাতে রয়েছে সাসেক সড়ক প্রকল্প-২। এই প্রকল্পে এলেঙ্গা থেকে শুরু করে হাটিকুমরুল-রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেন করা হবে। এ প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় হবে সাড়ে ১১ হাজার কোটি থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা। এটাই সড়কের জন্য সর্ববৃহত্ প্রকল্প।’ ইতিমধ্যে সাসেক-১ নম্বর প্রকল্পের কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘১৯০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য হবে এই চার লেন সড়কের। আমরা আশা করছি দ্রুত একনেকে এই প্রকল্প অনুমোদনের জন্য দিতে পারব। হাতে যে প্রকল্পগুলো আছে তা শেষ হওয়ার পর আরেকটি প্রকল্প আসছে। সেটি হলো— আমাদের ঢাকা মেট্রো সার্কুলার লেন, মিড সার্কুলার লেন, ইনার সার্কুলার লেন— এই তিনটি সার্কুলার লেন করা হবে এবং কিছু অংশ আন্ডারগ্রাউন্ড থাকবে। এর জন্য একটি রূপরেখা দাঁড় হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সভায় অনুমোদনও হয়েছে এর। এটা আমাদের বড় প্রকল্প। এজন্য বরাদ্দ থাকবে অনেক।’ তিনি বলেন, ‘লন্ডনে যে আন্ডারগ্রাউন্ড তা প্রথমে শুরু হয়েছিল সার্কেল রোড দিয়ে। তৃতীয় প্রকল্প হলো পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় পদ্মা সেতু আমাদের পরিকল্পনায় আছে ভবিষ্যত্ প্রকল্প হিসেবে। এ ছাড়া চতুর্থ প্রকল্প হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটা হবে অত্যাধুনিক। পৃথিবীর সর্বশেষ টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে। এটা পদ্মার পাড়ে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা কয়েকটি জায়গা নিয়ে স্টাডি করছি, মাটি পরীক্ষা হচ্ছে।’ এ ছাড়া মন্ত্রী বলেন, ‘এলএনজি (লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস) টার্মিনাল আরও দুটি হবে। আমরা কয়েকটি দেশের সঙ্গে কথা বলেছি। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা ও জার্মানি চারটি দেশ জড়িত আছে এলএনজি টার্মিনালে। একটি টার্মিনালের কাজ চলছে।’

আইটি সেক্টরের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় আমরা আইটি পার্ক করছি। সামনে আমাদের সক্ষমতার জায়গাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় সক্ষমতার জায়গা হবে আইসিটি খাত। একদিকে এটি আমাদের শিক্ষিত করে তুলবে, অন্যদিকে মানবসম্পদ তৈরি করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। নিজেরা আয় করার সুযোগ তৈরি হবে। ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করবে। আউটসোর্সিংয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশ ও বিদেশের জন্য এটা উপযুক্ত।’ মন্ত্রী বলেন, ‘আইসিটির মার্কেট দেশেও অনেক বড়। আমরা চেষ্টা করছি পেপারলেস প্রশাসন করার। আবার জায়গাজমির কাগজপত্র ডিজিটাল হচ্ছে। তখন এসব ক্ষেত্রে আইটির গুরুত্বও অনেক বেড়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর প্রায় ২১ লাখ মানুষ মানুষের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। প্রতি বছর আমরা ১০ থেকে ১৫ মিলিয়ন মানুষকে মূলধারার অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করব এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করব। চলতি বছর কমপক্ষে ৬-৭ লাখ মানুষ বিদেশ যাবে। আমার ধারণা, ১৫-১৬ মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর : পদ্মার পাড়ে বঙ্গবন্ধুর নামে দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চারটি স্থানে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। এর মধ্যে পদ্মার পাড়ে বিমানবন্দর করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হলে নিয়োগ দেওয়া হবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এবং দ্রুত শেষ করা হবে টেন্ডার প্রক্রিয়া। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের জন্য প্রাক্কলিত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৩৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। জানা গেছে, স্থান নির্ধারণে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের বিস্তারিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এর আওতায় এখন আবার নতুন করে চারটি স্থান চিহ্নিত করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। সেগুলো হচ্ছে মাদারীপুরের শিবচরের চরজানাজাত, ঢাকার দোহারের চরবিলাসপুর, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের কেয়াইন ও লতব্দী এলাকা। তবে পদ্মা সেতু থেকে দূরত্ব কম থাকায় চরজানাজাতকে তালিকার প্রথমে রাখা হয়েছে। চারটি স্থান নির্বাচনের বিষয়ে কার্যপত্রে বলা হয়েছে— প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নিমিত্ত বেসামরিক পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকার সঙ্গে উত্তম যোগাযোগ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের বিষয়টি সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনপূর্বক স্থান নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের লক্ষ্যে মোট নয়টি স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করে ঢাকা থেকে দূরত্ব, যোগাযোগব্যবস্থা, জমির পর্যাপ্ততা, আন্তর্জাতিক রুট, সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগব্যবস্থা, ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা, পুনর্বাসন, যাতায়াত খরচ ইত্যাদি বিবেচনা করে উপরিউক্ত চারটি স্থান নির্বাচন করা হয়। উল্লেখ্য, মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদনকালে প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছিল ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা।

বদলে যাচ্ছে ঢাকা : রাজধানীর যানজট কমাতে নেওয়া হচ্ছে নতুন উদ্যোগ। ঢাকার চারপাশে তিনটি সার্কুলার রোড করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো সার্কুলার লেন বা সার্কুলার রোড নির্মাণের পরিকল্পনা ইতিমধ্যে সরকার অনুমোদনও দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রো সার্কুলার লেন, মিড সার্কুলার লেন, ইনার সার্কুলার লেন— এই তিনটি সার্কুলার লেন ঢাকায় করা হবে এবং কিছু অংশ আন্ডারগ্রাউন্ড থাকবে। এর জন্য একটি রূপরেখা তৈরি হয়েছে। এমনকি মন্ত্রিপরিষদ সভায় তা অনুমোদনও হয়েছে। তবে এই রোড হলে ঢাকার যানজট অনেকটাই কমে আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দ্বিতীয় পদ্মা সেতু : পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া পয়েন্টে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সরকার নীতিগতভাবে এ প্রস্তাবিত সেতুর প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) অনুমোদন করেছে এবং এটা বিল্ড, ওউন, অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফারের (বিওওটি) ভিত্তিতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির আওতায় নির্মাণের চিন্তা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজধানীর সঙ্গে যশোর, কুষ্টিয়া, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অন্য জেলাগুলোকে সংযুক্ত করার জন্য এই দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেতুটি নির্মিত হলে দক্ষিণ-পশ্চিম ও দেশের অন্যান্য এলাকার ব্যবসা এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে। সৃষ্টি হবে বাড়তি কর্মসংস্থানের সুযোগ, যা দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ২০১১ সালে অনুমোদিত পিডিপিপি অনুযায়ী এই সেতু নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার (১৩ হাজার ১২১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা)। এর আগে ২০১১ সালের ২৭ অক্টোবর মন্ত্রিসভার অর্থনীতিবিষয়ক কমিটি সরকারি- বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) আওতায় বিওওটির ভিত্তিতে এই দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন করে।

চার লেন হচ্ছে রংপুর মহাসড়ক : চার লেন হচ্ছে এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক। আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও দুর্ঘটনা রোধে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। সাসেক সংযোগ প্রকল্প-২-এর মাধ্যমে এলেঙ্গা থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত ও সারা দেশে মাঝারি আকারের ১৭টি সেতু নির্মাণ করা হবে। এতে সম্ভব্য ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা। জানা গেছে, রংপুর থেকে এ মহাসড়কের একটি অংশ লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা হয়ে পাশের দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ রুটের মাধ্যমে ভারত, নেপালসহ অন্যান্য দেশে সরাসরি ব্যবসার প্রসার ঘটানো সম্ভব। এটি এশিয়ান হাইওয়ে, বিবিআইএন ও সাসেকের একটি অংশ। প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে দেশের কর্মসংস্থান বাড়বে। উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় যাতায়াতের দূরত্বও কমে আসবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে এশিয়ান হাইওয়ে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) ও বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক করিডরে (বিসিআইএম) নতুন করে বাংলাদেশের আটটি মহাসড়ক যুক্ত হতে যাচ্ছে। এ সড়কগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে ৬০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১৯০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। উত্তরবঙ্গে শিল্পের প্রসারসহ বুড়িমারী-বাংলাবান্ধা হয়ে ভারত ও নেপালের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় এ মহাসড়ক ভূমিকা রাখবে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। জানুয়ারিতে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব দেওয়া হয় এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পটির বিষয়ে। এ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১০ হাজার ১৩৩ কোটি ৬৪ লাখ ব্যয় করা হবে। প্রকল্প প্রস্তাবে সড়ক বিভাগ জানায়, উত্তরবঙ্গ-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ১২ হাজার থেকে ২৯ হাজার যান চলাচল করে। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ৪৩ হাজার ছাড়াবে। সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনার হারও বেড়েছে। এসব চিন্তা মাথায় রেখেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।

পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেললাইন : নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর কল্যাণে সরাসরি রেলপথ যাবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত। এরপর ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করবে সরকার। প্রথম ধাপে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্তু ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে বরিশাল থেকে পটুয়াখালী জেলার পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পের প্রিলিমিনারি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (পিডিপিপি) প্রস্তুত করা হয়েছে। পিডিপিপি অনুসারে প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর