ইরানের তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতসহ একাধিক সেক্টরে যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সম্প্রতি ইসরায়েলে তেহরানের পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপ নিল। নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের তেল বেচাকেনা ও পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনগুলোর কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও অর্থ বিভাগ এক যৌথ বিবৃতিতে শুক্রবার এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘ইরানের নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করে জানিয়েছে, তেহরানের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া জানাতে আমরা প্রস্তুত। আজকের পদক্ষেপের মাধ্যমে ইরান সরকারকে বাধা দেওয়া হবে, যাতে তারা তেল বিক্রি থেকে পাওয়া অর্থ পারমাণবিক কর্মসূচি, ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত উস্কে দিতে ব্যবহার করতে না পারে।’
ইরান থেকে ১ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়, যার পেছনে হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইরানি সেনাবাহিনীর সমন্বিত ভূমিকা ছিল। এই হামলার জবাব হিসেবে তেল আবিব সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই সময় যুক্তরাষ্ট্রও তেহরানকে দমাতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জোরদার করেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এবার তেলের পাশাপাশি পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প ও সংশ্লিষ্ট পরিবহন মাধ্যমগুলো রয়েছে। এর ফলে ইরানের রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রশাসনের নতুন এই পদক্ষেপের ফলে ইরানের সঙ্গে যুক্ত যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে। মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবে না। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ১৭টি জাহাজ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, পানামা এবং আরও কিছু দেশে নিবন্ধিত যানবাহনসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠান ও ছয়টি যানবাহন এসেছে।
ইরান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার অধীন, যা দেশটির প্রায় সব ধরনের বাণিজ্য ও সম্পদকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কর্মসূচির আওতায় হাজারো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের মধ্যে ইরানি এবং অন্যান্য বিদেশি সংস্থাও রয়েছে। মার্কিন কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের (সিআরএস) তথ্য অনুসারে, ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্য হলো ইরানকে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি ও আঞ্চলিক সামরিক প্রভাব কমাতে বাধ্য করা এবং তেহরানের নীতি পরিবর্তন করা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল