শনিবার, ১৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

মেহেরপুরের আম যাবে ইউরোপে

মাহবুবুল হক পোলেন, মেহেরপুর

মেহেরপুরের আম যাবে ইউরোপে

গত বছর মেহেরপুরের আম রপ্তানি করা দেশে এবারও মেহেরপুরের আমের চাহিদা বেড়েছে। এবার ইউরোপের আটটি দেশে দ্বিতীয়বারের মতো মেহেরপুরের আম তার স্বাদ ছড়াবে।

 আম চাষের জেলা হিসেবে মেহেরপুরের আলাদা খ্যাতি আছে। বিশেষ করে মাটি ও আবহাওয়ার কারণে মেহেরপুরের হিমসাগর, ল্যাংড়া আমের রয়েছে আলাদা পরিচিতি। গত বছর প্রথম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পর চলতি বছর ২০০ টন আম যাবে ইউরোপের দেশগুলোয়। এজন্য জেলার বিভিন্ন আমবাগানে ব্যাগ পদ্ধতিতে আম চাষ হচ্ছে।

আমের রাজা হিমসাগরকে আন্তর্জাতিক বাজারে ছড়িয়ে দিতে মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ২০১৫ সালে উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগে জেলার ১৫টি বাগান নির্বাচন করা হয়। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সেসব বাগান থেকে প্রথমবারের মতো ৪৫ হাজার আম (১২ টন) সংগ্রহ করে। এবার যাবে ২০০ টন আম। নির্ধারিত বাগানগুলোয় গাছের আমে কার্বন ব্যাগ পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আম চাষিদের প্রতিটি কার্বন ব্যাগ কিনতে হয়েছে ৪ টাকা করে। এসব ব্যাগ দুই বছর ব্যবহার করা যাবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর থেকে চাষি নির্বাচন করা হয়েছে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং বা চুক্তিভিত্তিক আম উৎপাদনের জন্য। আম রপ্তানি নিয়ে কাজ করছে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সংস্থা সলিডারিডেড নেটওয়ার্ক।

মেহেরপুর সদর উপজেলার নির্বাচিত আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানগুলোয় কার্বন ব্যাগ পরানো আম শোভা পাচ্ছে। দূর থেকে দেখে মনে হয় প্রতিটি গাছে অসংখ্য বাবুই পাখির বাসা।

ঝাউবাড়িয়া গ্রামের ৩০ বিঘা জমির আমবাগানের মালিক শাহীনুর রহমান জানান, তার বাগানে ৩০০ হিমসাগর আমের গাছ রয়েছে। এসব গাছে আম বাছাই করে সেগুলো এক ধরনের কার্বন ব্যাগ পরিয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

আমদহ গ্রামের ওবাইদুর রশিদ সুমন জানান, তার বাগানের আম ইউরোপে যাবে শুনে তিনি আনন্দিত। আম চাষিরা বিদেশে রপ্তানি করার জন্য উৎসাহিত হয়ে আম গাছ পরিচর্যায় যত্নবান হয়েছেন।

চাষিরা জানান, আমে আটি আসার পর থেকেই বাছাই করা আমে বিশেষ এই ব্যাগ পরানো হয়েছে। এই ব্যাগ পরানোর ফলে বাইরের কোনোরকম রোদ, বৃষ্টি এমনকি পোকামাকড় ওই আমের ক্ষতি করতে পারবে না। এ ধরনের নির্বাচিত বাগানগুলোয় আম বাছাই করে ব্যাগে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ২০ মে ওই আম সংগ্রহ শুরু হবে। রপ্তানি করা হবে শুধু হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপলি জাতের আম।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মফিজুর রহমান বলেন, ব্যাগে সংরক্ষণ করলে আমের বোঁটা শক্ত হবে, বাইরের যে কোনো ক্ষতিকর অবস্থা থেকে রক্ষা পাবে এবং রং নষ্ট হবে না। দামও ভালো পাবে চাষি।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মেহেরপুরের হিমসাগর দেশের সবচেয়ে সুস্বাদু আম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্যোগে মেহেরপুরের এই সুস্বাদু হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপলি আম ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে রপ্তানি করা হচ্ছে। চাষিদের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে ব্যাগ পদ্ধতিতে আম চাষ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে।

সর্বশেষ খবর