হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডের সাজা নিয়ে প্রায় ২৪ বছর কনডেম সেলে কাটানোর পর শরীফা বেগম ও সামাদের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। খুনের মামলার আসামি শরীফা বেগম ও সামাদের আপিল খারিজ করে গতকাল প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগ এ রায় দেন। সেই সঙ্গে ফাঁসির সেল থেকে তাদের সাধারণ সেলে নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। গত ১ জুলাই ‘ফাঁসির দিন গুনে এক নারীর ২৪ বছর’ শিরোনামে সহযোগী এক দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রাখার কনডেম সেলে রাখা ওই নারীর কাহিনি তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি প্রধান বিচারপতির নজরে আসার পর শরীফার আপিল মামলা দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর আপিলটি শুনানির কার্যতালিকায় আসে। গত ৩১ জুলাই আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৮০ নম্বর ক্রমিকে থাকা আইটেমটি দ্রুত শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন শরীফা ও সামাদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এরপর আপিল বিভাগ বিষয়টি শুনানির জন্য গতকালের দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী শুনানি শেষে রায় দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২২ মে রাজধানীর মতিঝিল থানার অধীন শান্তিনগর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে রুবিনা আক্তার নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রুবিনা হত্যাকান্ডে জড়িত ছিলেন তারই ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী শরীফা।
কারণ পাশের একটি ভবনের তৃতীয় তলার এক ফ্ল্যাটের গৃহভৃত্য সামাদের সঙ্গে তার প্রেমের মেলামেশার সম্পর্ক নিয়ে শরীফাকে বকাঝকা ও মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন রুবিনা। তারই প্রতিশোধ নিতে রুবিনাকে হত্যা করতে সামদকে শর্ত দেয় শরীফা। এরপর রুবিনাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০০০ সালের ৩১ অক্টোবর সামাদ ও শরীফাকে মৃত্যুদন্ড দেন আদালত। এ রায়ের পর থেকে সামাদ ও শরীফাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ফাঁসির আসামিদের সেলে। পরবর্তীতে হাই কোর্ট মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন।