১৫ মে, ২০২২ ১৫:৪২

বঙ্গবন্ধু ধান ও ব্ল্যাক রাইসে উদ্বুদ্ধ কৃষক

নজরুল মৃধা, রংপুর

বঙ্গবন্ধু ধান ও ব্ল্যাক রাইসে উদ্বুদ্ধ কৃষক

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহিপুর সেচ পরীক্ষা খামা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নতুন নতুন জিংক সম্বৃদ্ধ ধান উৎপাদন করছে। চলতি বোরো মৌসুমে খামারে চাষকৃত বঙ্গবন্ধু ধান ও ব্ল্যাক রাইসসহ বিভিন্ন জাতের ধান চাষে পাওয়া গেছে সাফল্য। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) আওতায় এই খামারে রবিবার শস্য কর্তন করে প্রতি হেক্টরে ফলন পেয়েছে ব্রিধান-১০০ (বঙ্গবন্ধু ধান) ৬ মেট্রিকটন, ব্রিধান-৯২ ৬ দশমিক ৭০ মেট্রিকটন, ব্রিধান-৭৪ ৫ দশমিক ৮০ মেট্রিকটন, ব্ল্যাক রাইস ৫ দশমিক ৫০ মেট্রিকটন, গোল্ডেন রাইস ৫ দশমিক ১০ মেট্রিকটন এবং হাইব্রিড (হীরা-২) ৬ দশমিক ৩০ মেট্রিকটন। খামারের উৎপাদিত ধানের বীজ নিয়ে উদ্বুদ্ধ  হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। 

জানাগেছে, রংপুরের মহিপুর সেচ পরীক্ষা খামারসহ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের চারটি কৃষি প্রদর্শনী খামার ছিল। এক সময় খামারগুলো থেকে কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালিত হলেও পর্যাপ্ত জনবল না থাকার কারণে পর্যায়ক্রমে ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া ও সাতক্ষীরার খামার তিনটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে মহিপুর সেচ পরীক্ষা খামারটিই শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের একমাত্র খামার হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ৩০ একর জমির ওপর মহিপুর সেচ পরীক্ষা খামারের কার্যক্রম শুরু হলেও তিস্তার ভাঙনে কমতে কমতে বর্তমানে এর আয়তন দাঁড়িয়েছে মাত্র নয় একরে। এছাড়া খামারে অনুমোদিত ৩৯ জনবলের মধ্যে আছে মাত্র পাঁচজন। যা দিয়েই পুরো খামারের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। 

দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বুড়িতিস্তা প্রকল্পের অধীনে ১৯৬০ সালে মহিপুর সেচ পরীক্ষা খামার স্থাপন করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। বুড়ি তিস্তা ও তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর থেকে প্রকল্প এলাকার মাটি ও কৃষি আবহাওয়া উপযোগী আধুনিক চাষাবাদ প্রযুক্তি, শস্যবিন্যাস, ফসলের জাত নির্বাচন ও সেচের পরীক্ষা-নীরিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে এই সেচ পরীক্ষা খামারের মাধ্যমে। শুরু থেকে প্রকল্পের সেচ ও কৃষি উন্নয়নে গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখলে জনবল সংকটে কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। 

রবিবারের শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে আসা মহিপুর সেচ পরীক্ষা খামারের আওতায় আনুরবাজার এলাকার চাষি আব্দুল জলিল, নয়া মিয়া ও বিজয় বাঁধ এলাকার মোকলেছার রহমান জানান, এই খামারের কারণেই তারা স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল নানা ফসল উৎপাদন করতে পারছেন। নতুন নতুন জাতের প্রসার ঘটছে এই এলাকায়। ফসল চাষের কৌশলও তারা শিখতে পাছেন এই খামারের মাধ্যমে। 

খামারের দায়িত্বরত উপ-প্রধান কৃষিতত্ত্ববিদ রাফিউল বারী জানান, এবারই প্রথম খামারে বঙ্গবন্ধু ধান ও ব্ল্যাক রাইস চাষ করা হয়েছে। আশানুরুপ ফলন হওয়ায় পরবর্তীতে এই ধান চাষে স্থানীয় চাষিরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। 

তিনি বলেন, জনবল সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতার পরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের একমাত্র এই খামারের মাধ্যমে কৃষকের উন্নয়নে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পের স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতায় মহিপুর সেচ পরীক্ষা খামারে বিভিন্ন পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর