নওগাঁয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বস্তায় আদা চাষ। দামি এই ফসল পতিত জায়গায় বস্তায় চাষ করে লাভজনক হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকছেন আদা চাষের দিকে। এতে করে নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। অপরদিকে, এমন দামি ফসল চাষ করতে জেলার আগ্রহী চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে কৃষি বিভাগ।
মসলা জাতীয় ফসল আদা পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় চাষ শুরু হয়েছে। জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে পত্নীতলা, পোরশা, সাপাহার, ধামইরহাট, মান্দা, বদলগাছী, রাণীনগর উপজেলায় বেশি চাষ হচ্ছে। প্রতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে বস্তায় আদা লাগানো হয় আর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে আদা তোলার উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রতি বস্তা থেকে প্রায় ১ কেজি করে আদার ফলন পাওয়া সম্ভব।
জেলার রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর এলাকার সৌখিন কৃষক জামিল হোসেনের পতিত জমিতে ১৪ শত বস্তায় চাষ করা সারি সারি আদার গাছ শোভা পাচ্ছে। কম খরচে এমন লাভজনক ফসলের চাষ দেখতে প্রতিদিনই জামিলের বাগানে ভিড় করছেন আগ্রহী চাষিরা। প্রতি বস্তায় আদা লাগানো থেকে শুরু করে আদা তোলা পর্যন্ত আনুমানিক ৪০ টাকা খরচ হয়। এ ছাড়া রোগবালাই অনেক কম এবং সারও প্রয়োগ করতে হয় না বললেই চলে। তাই দিন দিন বস্তায় আদা চাষ জনিপ্রয় হয়ে উঠছে।
কৃষক জামিল হোসেন বলেন, খুব সহজেই বস্তায় আদা চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। আমার ১৪ শত বস্তায় আদা চাষ করতে খরচ হবে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আর আদা বিক্রি হবে ৩ লাখ টাকা। শুধু বাগানেই নয় যে কেউ বাড়ির ছাদে কিংবা যে কোনো ছায়াযুক্ত পতিত জায়গায় খুব সহজেই বস্তায় আদা চাষ করে লাভবান হতে পারেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বস্তায় আদা চাষ অনেক লাভজনক হওয়ায় দিন দিন নওগাঁয় বস্তায় আদা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বস্তায় আদা চাষ খুবই সহজলভ্য পদ্ধতি। আদার গাছে রোগের আক্রমণ খুবই কম। এ ছাড়া সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না বললেই চলে। তাই দিন দিন বস্তায় আদা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শুধু বাগানেই নয়, যে কেউ বাড়ির ছাদে কিংবা যে কোনো ছায়াযুক্ত পতিত জায়গায় খুব সহজেই বস্তায় আদা চাষ করে লাভবান হতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, মসলা জাতীয় ফসল চাষ প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার আগ্রহী কৃষকদের বস্তাসহ পতিত জমিতে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। খুব সহজেই একজন মানুষ অল্প পতিত জায়গাতেও কয়েকটি বস্তায় আদা চাষ করতে পারেন। এতে করে উৎপাদিত ওই আদা দিয়ে ওই ব্যক্তি নিজেদের চাহিদা খুব সহজেই পূরণ করতে পারবেন। দিন দিন বস্তায় আদা চাষ অনেক লাভজনক হওয়ায় জেলার প্রতিটি এলাকায় বস্তায় আদা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বস্তায় আদা চাষ করা প্রতিটি চাষিসহ আগ্রহীদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। চলতি মৌসুমে নওগাঁয় ২২ হাজার কৃষকের মাধ্যমে ৩ লাখ ৮৩ হাজার বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮৩ মেট্রিক টন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই