কিশোর গ্যাংয়ের পাল্লায় পড়ে বিভিন্ন অপরাধে ক্রমেই জড়িয়ে পড়ছে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোররা। এতে প্রতিনিয়ত ভঙ্গ হচ্ছে শত শত মা-বাবা স্বপ্ন। এই গ্যাংয়ের এক একজন সদস্য হিংস্র, নৃশংস ও বিভীষিকাপূর্ণরূপে দেখা দিচ্ছে। এর থেকে বাচতে হলে প্রতিটি ছাত্রের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। আগামীর প্রজন্মকে রক্ষার লক্ষ্যে এখনই গ্যাংয়ের লাগাম টেনে ধরা দরকার। তা না হলে ভবিষ্যতে এটি খুব ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘ কুমিল্লা জেলা কর্তৃক কুমিল্লা কমার্স কলেজ মিলনায়তনে 'কিশোর গ্যাং সমস্যায় করণীয় ও প্রতিকারের উপায়' শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তরা এসব কথা বলেন।
বক্তরা আরও বলেন, স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে হবে। কমিউনিটিতে সুস্থ বিনোদনও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নিয়মিত খোঁজখবর রাখতে হবে- ক্লাস ঠিকমতো হচ্ছে কিনা; স্কুলে মাদক সেবন, র্যাগিং ইত্যাদি হচ্ছে কিনা। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রধান উপদেষ্টা, কুমিল্লা সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর নূরউর রহমান খান। বসুন্ধরা শুভসংঘের কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি ও কালের কন্ঠের কুমিল্লা প্রতিনিধি জাহিদ পাটোয়ারী পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বসুন্ধরা শুভসংঘের উপদেষ্টা, কুমিল্লা কমার্স কলেজ অধ্যক্ষ হুমায়ূন কবীর মাসউদ, কুমিল্লা মহানগরীর কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রকিবুল ইসলাম, বসুন্ধরা শুভসংঘের উপদেষ্টা, গোমেতী সংবাদের সম্পাদক ও বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব মোবারক হোসেন, শুভসংঘের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের কুমিল্লা প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মোল্লা, সহসভাপতি ওমর ফারুক ও কুমিল্লা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও নিউজ টুয়েন্টিফোরের কুমিল্লা প্রতিনিধি এইচ এম মহিউদ্দিন প্রমুখ।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে করে বক্তরা বলেন, সন্তানকে বিভিন্ন চারিত্রিক গুণাবলির শিক্ষা দিতে হবে, তাকে সময় দিতে হবে এবং একইসঙ্গে সন্তানের আচার-আচরণের ওপর খেয়াল রাখতে হবে যাতে পারিবারিক শিক্ষা সমুন্নত থাকে। আপনার সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কি করছে, স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিচ্ছে কিনা এবং সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে বাসায় ঢুকছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখতে হবে। অন্যথানায় আপনার অবহেলায় এক দিন স্বপ্নের সন্তানটি হারিয়ে যাবে অপরাধ জগতে। সেই সময়ে হাজারো আফসোস করলেও কোন কাজে আসবে না। সুতরাং সময় থাকতে গুরুত্ব দিয়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, বন্ধু নির্বাচনে বিচক্ষণ হতে হবে। ধুমপান এবং মাদক সেবন করা বন্ধুর সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। বন্ধুর সঙ্গে কোথায়ও ঘুরতে বের হবার আগে হলে অবশ্যই জানতে হবে কোথায় যাচ্ছি? কেন যাচ্ছি। জীবনের লক্ষ্য ঠিক রেখে তোমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কোন ভাবেই লাইনচ্যুত হওয়া যাবে না।
বিডি প্রতিদিন/এএ