পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে রবিবার সকাল ৭ টায় শুরু হয়েছে নিরাপত্তাকর্মীদের ডিউটি। রাত অবধি চলবে সেটা। নির্দিষ্ট কোনো এক ছাউনির নিচে সারাদিন এভাবেই দায়িত্ব পালন করবেন তারা। তাদের দেওয়া নিরাপত্তায় উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে ১৪২৬ বাংলা নববর্ষ।
সকাল থেকেই মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি এবং সেজেগুজে আসা কিশোর-কিশোরী আর তরুণ-তরুণীসহ সকল শ্রেণির মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ঠিক তখন থেকেই উৎসবে আসা মানুষগুলোর নিরাপত্তা দিতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেছেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
এক শ্রেণির মানুষ আছে, যারা সকাল থেকে ঘুরে-ফিরে উদযাপন করে একটা সময় ক্লান্ত হয়েছে। কেউ ঠান্ডা পানিতে কিংবা নানান পদের জুস আর শরবতের মাধ্যমে নিজেদের তৃষ্ণা মিটিয়েছে। কেউবা আবার কোথাও একটু বিশ্রামে গিয়ে আবারও তৈরি হচ্ছেন রাতের আনন্দের জন্য। শুধু নিরাপত্তাকর্মীদেরই সকাল থেকেই দেখা গিয়েছিল কোথাও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনে, আবার কোথাও সতর্কতার সাথে অবস্থান করতে। এভাবেই বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে সারাদিন নজর রেখেছেন মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে কিনা সেদিকে।
তারা একেকজন পুলিশ, একেকজন নিরাপত্তাকর্মী। দিন শেষে পরিবার পরিজনের সাথে তাদেরও নববর্ষ উদযাপনের ইচ্ছা জাগে। ইচ্ছা জাগে প্রতিটি উৎসবে পরিবারকে সময় দিতে। তাদেরও ইচ্ছা হয় নববর্ষের রংবেরঙের জামা গায়ে বর্ষবরণকে স্মরণীয় করে রাখতে। কিন্তু দায়িত্ব আর দায়বদ্ধতা থেকে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন মানুষের কল্যাণে, মানুষের নিরাপত্তায়। তাই সারাদিনের উদযাপন শেষে নিরাপদে বাসায় ফিরে তাদেরকেও একবার কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করা উচিৎ।
কথা বলছিলাম হাটহাজারি থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়ে, তিনি জানান, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ থেকে পাঁচ’শ পুলিশ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নববর্ষ উপলক্ষে মোতায়েন করা হয়েছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা এসে থাকে। পয়লা বৈশাখের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অনেক সুন্দর একটা জায়গা। তাই দর্শনার্থীর সংখ্যাও কম নয়। তাই এখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকাল ৭ টা থেকে সারাদিন নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ প্রশাসন।
তিনি জানান, আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সর্বমোট ৩৭টি পয়েন্টে আমাদের নিরাপত্তাকর্মীরা ছিল। পাশাপাশি প্রচণ্ড গরমে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এবং শহীিদ আব্দুর রব হলের মাঠে মূল অনুষ্ঠান স্থলে বিনামূল্যে দু’টি সুপেয় পানির ট্যাঙ্ক বসানো হয়। সেখানে কয়েক হাজার লিটার পানি মজুদ ছিল। সারাদিন ক্লান্ত মানুষের এই সেবা দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। এছাড়া যেকোনো সহযোগিতাতার জন্য আমরা শহীদ মিনারের সম্মুখে এবং শহীদ আব্দুর রব হলের নিকটে দু’টি হেল্প ডেস্কও বসাই। সর্বপরি দিনভর নববর্ষ উদযাপন যেমন উৎসবমুখর ছিল, তেমনি নিরাপদও ছিল।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন