অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান দস্তগীরকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুদ্রনাথ টুটনের রুমে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে মানসিক নির্যাতনসহ মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেতাই শেকৃবির কুমিল্লা বঙ্গীয় আঞ্চলিক গ্রুপের হলেও তাদের মধ্যে দস্তগীর সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠু ও টুটন সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের অনুসারী।
ভুক্তভোগী দস্তগীর জানান, ‘রবিবার রাতে আঞ্চলিক গ্রুপের (কুমিল্লা বঙ্গ) মিটিং চলাকালীন একই আঞ্চলিক গ্রুপের হয়েও কেন সে সভাপতি গ্রুপের রাজনীতি করে এমন অভিযোগে টুটনের উপস্থিতিতে তার রুমে তারই অনুসারীরা আমাকে রাত আড়াইটা থেকে শুরু ফজরের আগ পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘণ্টা রুমে আটকে মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি কাঠ দিয়ে মারধর করে। এ সময় ওই রুমে প্রায় ৫০ জন উপস্থিত ছিল, যাদের মধ্যে ১৬ ব্যাচের উজ্জ্বল আমাকে প্রথমে পেটে লাথি মারে। এরপর ১৭ ব্যাচের তাশরীফ, ১৪ ব্যাচের মামুন হোসাইন (পরিবেশ বিষয়ক উপ-সম্পাদক) ও সাকিব এবং ১৮ ব্যাচের রাকিব আমাকে কাঠ দিয়ে মারধর করে মুখ, হাত ও পেটে মারাত্মকভাবে আহত করে। পরে অসুস্থ অবস্থায় আমি সোমবার ভোরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের সাথে কথা বললে তারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা তার সাজানো নাটক। অভিযুক্ত শেকৃবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুদ্রনাথ টুটন বলেন, ‘রাতে আমাদের অভ্যন্তরীণ মিটিংয়ে মোস্ট জুনিয়র থেকে শুরু করে মোস্ট সিনিয়র সবাই উপস্থিত ছিল। সেখানে মারধরের মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। সকালে সে (দস্তগীর) অসুস্থ শুনে আমি তাকে হাসপাতালে দেখতে যাই।’
সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. সোনিয়া ইসলাম বলেন, ‘ভর্তিকৃত দস্তগীরের মুখসহ কিছু জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
শেকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি, তবে সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনাটি দুপুরে শুনেছি। এটা তাদের বঙ্গীয় ব্যাপার, আমাদের কিছু করার নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর মো. রুহল আমিন বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত ও দস্তগীরকে দেখতে গিয়েছিলাম। মিটিংয়ে উপস্থিত অনেকেই জানায়, মারামারি না হাতাহাতি হয়েছিল। এ ব্যাপারে প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব